ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি॥
ঢাকার ধামরাই উপজেলার উত্তর জয়পুরা বাজারে লুটপাট, মারধর ও নগদ টাকা চুরির অভিযোগে থানায় দায়ের করা একটি এজাহার নিয়ে এলাকায় ব্যাপক বিভ্রান্তি ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার এজাহারে গুরুতর অভিযোগ আনা হলেও সরেজমিন অনুসন্ধানে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির পক্ষ থেকে পাওয়া গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। তারা এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন।
এজাহারের বর্ণনা বনাম বাস্তবতা
সম্প্রতি মোসাঃ সেলিনা আক্তার নামে এক নারী তাঁর ছেলে ইয়াসিনকে কেন্দ্র করে উত্তর জয়পুরা বাজারে মারধর এবং দেড় লাখ টাকা লুটের অভিযোগ এনে ধামরাই থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। তবে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিকরা বাজার এলাকায় গেলে স্থানীয় ১০-১২ জন দোকানদারসহ বাজার কমিটির দায়িত্বশীলরা জানান, এজাহারে উল্লেখিত সময় ও স্থানে এমন কোনো লুটপাট বা বড় ধরনের মারামারির ঘটনা ঘটেনি।
বাজার কমিটির বক্তব্য
উত্তর জয়পুরা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজম আলী সাংবাদিকদের বলেন, “বাজারে যদি এত বড় কোনো ঘটনা বা লুটপাট ঘটত, তবে সাধারণ ব্যবসায়ীরা অবশ্যই জানতেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ত। বাস্তবে আমরা এমন কিছুই দেখিনি। পুরো বিষয়টি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।” কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যরাও একই সুরে জানান যে, সেই সময় বাজার পরিস্থিতি ছিল একদম স্বাভাবিক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, উত্তর জয়পুরা বাজার একটি জনবহুল এলাকা। ঘটনার কথিত সময়ে সেখানে শতাধিক মানুষের উপস্থিতি ছিল। কিন্তু এত মানুষের মাঝে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী না থাকা এবং কোনো দোকানপাট ভাঙচুর না হওয়ায় মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কোনো বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এই মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত তথ্য দিয়ে মামলা সাজানো হয়েছে।
পুলিশের অবস্থান
এ বিষয়ে ধামরাই থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগীর দেওয়া এজাহারের ভিত্তিতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “তদন্তে যদি অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়া যায়, তবে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”