নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের (General Conference) সভাপতি নির্বাচিত হয়ে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের এই বিশেষায়িত সংস্থাটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের ৫৩ বছরের পথচলায় এটিই সর্বোচ্চ পদে নির্বাচন।
গত ৭ অক্টোবর ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাপানকে ৩০-২৭ ভোটে পরাজিত করে বিজয়ী হন।
প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ, জাপান, ভারত এবং দক্ষিণ কোরিয়া এই চারটি দেশ সভাপতির পদের জন্য তাদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিল। তবে সেপ্টেম্বরে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে।
রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা বর্তমানে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফ্রান্স, মোনাকো ও আইভরি কোস্টে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী মাসে উজবেকিস্তানের সামারকান্দে অনুষ্ঠেয় ইউনেস্কোর আসন্ন সাধারণ সম্মেলনে তিনি রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কুর কাছ থেকে সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
এই মর্যাদাপূর্ণ অর্জনকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তাঁরা ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এটিকে ‘একটি যুগান্তকারী অর্জন’ হিসেবে অভিহিত করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং স্থায়ী মিশনকে এই সফল প্রচারণার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য এক গভীর গর্বের মুহূর্ত।
২০২১ সালে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রদূত তালহা নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের প্রতি বাংলাদেশের নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এটি আমাদের দেশের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। বহুপাক্ষিকতার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমি ইউনেস্কোর লক্ষ্য ও আদর্শ রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।”