মজিবুর রহমান, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ॥
ফরিদপুরের সালথায় মোসাম্মাদ নিলুফা ইয়াসমিন (৫৫) নামে এক বিধবা নারীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সালথা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তিনি দাবি করেন, চাঁদা না দেওয়ার কারণে প্রভাবশালীরা তার জমি দখলের চেষ্টা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারীর অভিযোগ করে বলেন, সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের চন্ডীবরদী গ্রামে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে উত্তর চন্ডীবরদী মৌজায় আমার ৯৩ শতাংশ জমি পতিত রয়েছে। জমিটি পতিত হওয়ায় স্থানীয় যুবক ও তরুণরা সেখানে খেলাধুলা করে।
সম্প্রতি পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী পতিত ওই জমিতে শতাধিক আমের গাছ লাগিয়ে বেড়া নির্মাণ করি।
তিনি আরো বলেন, সবশেষ গত ৪ আগস্ট সেখানে আরো কিছু গাছ লাগাতে গেলে বাধা দেন বল্লভদী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. ওলিয়ার রহমান ও স্থানীয় মো. আরটি হাসান। একপর্যায় তারা আমার জমিকে খেলার মাঠ দাবি করে সব গাছ উপড়ে ফেলেন এবং বেড়া ভাঙচুর করেন।
এ সময় ইউপি সদস্য ওলিয়ার এবং আরটি হাসান আমাকে বলেন, এই জমিতে কিছু করতে হলে আমাদের বার লক্ষ্য টাকা দিতে হবে। তানা হলে এই জায়গায় আসতে দিবো না। বিষয়টি নিয়ে আমি সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে সাংবাদিকদের ভুয়া তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্বে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করান। এমন অবস্থায় আমার জমি উদ্ধারে প্রশাসন ও সংশ্লষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ওলিয়ার রহমান শেখ বলেন,
ওই জমি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কিনে নেয়। এরপর থেকে জায়গাটি খালি পরে থাকায় স্থানীয় তরুণরা খেলার মাঠ হিসেবে খেলাধুলা করে আসছে। এর আগে সরকারি বরাদ্দের মাধ্যমে মাঠটি ভরাটও করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি ওই খেলা মাঠটি নিজের জমি দাবি করে আমের গাছ লাগান নিলুফা ইয়াসমিন। এতে এলাকাবাসী বাঁধা দিলে আমার বিরুদ্ধে থানায় চাঁদা দাবির অভিযোগ করে।
চাঁদা দাবীর বিষয়ে অস্বীকার করে অন্য অভিযুক্ত আরটি হাসান বলেন, খেলার মাঠটি সরকারী জায়গায় রয়েছে। এখানে বড় বড় খেলাধুলাও হয়। মাঠ দখল করার জন্য মাঠের মাঝখান দিয়ে বেড়া দেয়। এটা নিষেধ করার পর আমাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ও সংবাদ সম্সেলন করে।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, জায়গাটি খালি থাকায় স্থানীয় ছেলে-পেলেরা খেলাধুলা করতো। তবে জায়গাটি মালিকানা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছে। আমি নিজে সেখানে গিয়েছিলাম। এখন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর তদন্ত করলে জায়গাটির আসল মালিক বের হয়ে আসবে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, ওই জমির মালিকানা যাচাই-বাছাই করতে স্থানীয় তহশীলদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।