অনলাইন প্রতিবেদন ॥
ঢাকা: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের প্রায় ৩ কোটি ৯৭ লক্ষ ৭০ হাজার বা প্রায় ৪ কোটি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। এই বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (MPI) অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে গড়ে ২৪.০৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (GED) কর্তৃক প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে আয়ের ভিত্তিতে দারিদ্র্য পরিমাপ করা হয়নি, বরং জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেবা যেমন— বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, পানি, বাসস্থান, পুষ্টি, শিক্ষা, এবং স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে এবং সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে। জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে এই হার সর্বোচ্চ (৬৫.৩৬%), এরপরই রয়েছে কক্সবাজার (৪৭.৭০%)। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম দারিদ্র্য হার ঝিনাইদহ জেলায়, যা ৮.৬৬%।
বয়স অনুযায়ী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের (২১.৪৪%) তুলনায় শিশুদের মধ্যে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার বেশি। শূন্য থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এই হার ২৮.৬৪% এবং ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ২৮.৮৩%।
তবে, এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপ এবং ২০১৯ সালের বহু সূচকবিশিষ্ট গুচ্ছ জরিপের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। ফলে বর্তমান বাস্তবতায় এই প্রতিবেদনের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় এক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি এই পদ্ধতিকে একটি সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে এর মাধ্যমে দেশের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে দারিদ্র্য বিমোচনের কাজ সহজ হবে।