বিশেষ প্রতিনিধি ॥
জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিরুদ্ধে আবারও একদলীয় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার পথে এগোনোর অভিযোগ তুলেছে জুলাই ঐক্য। সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, প্রেস ক্লাব যদি একদলীয় নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তাহলে গণমাধ্যম নতুন করে ফ্যাসিবাদের জন্ম দেবে এবং বাংলাদেশ আবারও পথ হারাবে। বুধবার (৩০ জুলাই, ২০২৫) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করা হয়।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণঅভ্যুত্থান ও প্রেস ক্লাবের ভূমিকা
জুলাই ঐক্য তাদের বিবৃতিতে বলেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম ও কিছু সাংবাদিক সংগঠন ছিল দুঃশাসনের পাহারাদার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন দেশজুড়ে দমন-পীড়ন ও গণহত্যা চলছিল, তখন জাতীয় প্রেস ক্লাবের কিছু সাংবাদিক নেতা সেই নির্যাতনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিক, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জয় এসেছিল। এই বিপ্লবের পর মানুষ আশা করেছিল, রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্যাসিবাদমুক্ত হবে। কিন্তু জুলাই ঐক্য অভিযোগ করেছে, এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান সংস্কার হয়নি এবং পূর্বের দমনমূলক শক্তিগুলোই তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
প্রেস ক্লাবের বর্তমান নেতৃত্ব ও বিতর্ক
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্টের পর কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজসহ কয়েকজন সাংবাদিক প্রেস ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নেন। তখন অনেকে ধারণা করেছিল, প্রেস ক্লাব এবার গণতান্ত্রিক হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এখনো আওয়ামী ঘরানার সাংবাদিকরা সেখানে অবস্থান করছেন, যাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগও রয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি পোস্টের বরাত দিয়ে জুলাই ঐক্য বলেছে, আগামী ১ আগস্ট ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রেস ক্লাবে যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি হচ্ছে, তাতে কেবলমাত্র একটি দলের অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অথচ গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এছাড়া ৫ আগস্টের পর প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে একটি রাজনৈতিক দলের নেতার নেতৃত্বে ‘মুজিববাদ’-এর স্লোগান দেওয়া এবং বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ার ঘটনাও স্মরণ করিয়ে দেয় জুলাই ঐক্য।
জুলাই ঐক্যের দাবি ও হুঁশিয়ারি
জুলাই ঐক্য দাবি জানিয়েছে, জাতীয় প্রেস ক্লাব যেন দলীয় রাজনীতির ব্যানারে অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকে অথবা ১ আগস্টের অনুষ্ঠানসহ ভবিষ্যতের সব আয়োজনেই যেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল অংশীজনদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।
সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, জাতীয় প্রেস ক্লাব যদি নতুন করে স্বৈরাচারী আচরণ করে, তাহলে তা গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম উভয়ের জন্যই অশনিসংকেত হয়ে দাঁড়াবে।