ক্রীড়া প্রতিবেদক ॥
শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ! পাকিস্তানের ফাহিম আশরাফের ঝোড়ো ফিফটি আর আহমাদ দানিয়ালের শেষ মুহূর্তের প্রতিরোধে যখন বাংলাদেশ শিবিরে ভয় দানা বাঁধছিল, ঠিক তখনই জ্বলে উঠলেন টাইগার বোলাররা। পাকিস্তানকে ১২৫ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৮ রানের নাটকীয় জয় তুলে নিলো লিটন দাসের দল। আর এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়: তানজিম-শরীফুলের দাপট
রান তাড়ায় নেমে পাকিস্তানের ইনিংস শুরু হয় চরম বিপর্যয়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রানআউট হয়ে ফেরেন ওপেনার সাইম আইয়ুব। এরপর মোহাম্মদ হারিস, ফখর জামান, হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজ কেউই টিকতে পারেননি। তানজিম হাসান ও শরীফুল ইসলামের বিধ্বংসী বোলিংয়ে মাত্র ১৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান।
বিপর্যয় এখানেই থামেনি। আগা সালমান ও খুশদিল শাহও দ্রুত বিদায় নেন। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৪৭ রানেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে সফরকারীরা। মেহেদী হাসানের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে খুশদিলের এলবিডব্লিউ হওয়াটা ছিল পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা।
ফাহিম আশরাফের পাল্টা জবাব
এমন ধ্বংসস্তূপের মাঝে একাই প্রতিরোধ গড়েন ফাহিম আশরাফ। রিশাদ হোসেনের এক ওভারে ২০ রান তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেন তিনি। শেষ দুই ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। ১৯তম ওভারে ফাহিম ও দানিয়ালের ব্যাটে আসে ১৫ রান। তবে ওভারের শেষ বলে ৪৫ রান করা ফাহিমকে বোল্ড করে দেন রিশাদ।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৩ রান, বাংলাদেশের ১ উইকেট। মোস্তাফিজের প্রথম বলে চার মেরে উত্তেজনা বাড়ান দানিয়াল। কিন্তু পরের বলেই ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। পাকিস্তান অলআউট হয় ১২৫ রানে, আর ৮ রানের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ইনিংস: জাকের আলীর লড়াকু ফিফটি
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। নাঈম শেখ, লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয় এবং পারভেজ হোসেন দ্রুত আউট হলে ২৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে স্বাগতিকরা।
এরপর হাল ধরেন জাকের আলী ও মেহেদী হাসান। পঞ্চম উইকেটে ৫৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন তারা, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে এই উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। মেহেদী ২৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হলেও, জাকের আলী এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান। শেষ ওভারে দুটি ছক্কা মেরে ৫৫ রান করে আউট হন তিনি, পূরণ করেন নিজের ফিফটি।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ১৩৩ রানে অলআউট হয়। জাকের আলী ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেই পুঁজি ভালোভাবেই রক্ষা করে টাইগাররা, এবং এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নেয়।