অনলাইন ডেস্ক॥
গাজীপুর, ২৮ জুন (যুগান্তর/চ্যানেল এস): গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে গ্রীনল্যান্ড পোশাক কারখানায় শ্রমিক হৃদয় (২০) নিহত হওয়ার ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ উদ্দিনের হাতে চরম দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে, যখন দৈনিক যুগান্তরের কাশিমপুর-কোনাবাড়ী প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম শামীম এবং চ্যানেল এস-এর গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিহতের বিষয়ে জানতে ওসির কার্যালয়ে যান।
জানা যায়, ওসি সালাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন। তিনি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং সাংবাদিকদের কোনো কথা না শুনেই দ্রুত তার কক্ষ ত্যাগ করেন। সাংবাদিকদের প্রতি ওসির এমন পেশাদারিত্বহীন আচরণে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিক মহল।
কারখানায় শ্রমিক নিহতের অভিযোগ
এর আগে, গত শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শনিবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের মধ্যে গ্রীনল্যান্ড পোশাক কারখানায় কর্মরত ইলেকট্রিক মিস্ত্রী হৃদয়কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত হৃদয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার শুকতারবাইদ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি কাশিমপুরের সুরাবাড়ী এলাকায় ভাড়া থাকতেন এবং গ্রীনল্যান্ড কারখানায় কাজ করতেন।
শ্রমিক বিক্ষোভ ও বিচার দাবি
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কারখানার সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। তারা হৃদয় হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত হৃদয়ের মা, মোছা. খোদেজা খাতুন, কারখানার সামনে এসে ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে আহাজারি করেন। সাংবাদিকদের হাতে আসা কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হৃদয়কে জীবিত অবস্থায় একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং পরে ওই কক্ষের ভেতরে ও বাইরে তার ওপর নির্যাতনের চিত্রও ধরা পড়েছে। পরবর্তীতে অ্যাম্বুলেন্সে করে হৃদয়ের মরদেহ কারখানা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানতে গিয়েই কোনাবাড়ী থানার ওসি সালাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন, যা পেশাদার সাংবাদিকতার জন্য অত্যন্ত অপমানজনক ও নিন্দনীয়। সাংবাদিকরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ওসির অশালীন আচরণের বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।