বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
১১ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম :
বাবার উপর অভিমান: ফরিদপুরে স্কুলছাত্রের আত্মহনন আদালতের আদেশ অমান্য করে গৃহবধূকে নির্যাতন ঢাকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের ৪ দেশে সব বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল: মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার আশঙ্কায় আকাশসীমা বন্ধ ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ‘মিথ্যা’: দাবি ইরানের যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর সাত বছরের কারাদণ্ড সালথা উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত BDRMGP FNF ফাউন্ডেশন: বার্ষিক সাধারণ সভা (AGM 2024-2025) ও ঈদ পুনর্মিলনী ২০২৫-এ আমন্ত্রণ সাবেক তিন সিইসির বিরুদ্ধে বিএনপির মামলার ঘোষণা: রবিবার আবেদন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির গঠনতন্ত্র অনুমোদন: নতুন দিগন্তে এনসিপি

আদালতের আদেশ অমান্য করে গৃহবধূকে নির্যাতন

Coder Boss
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫
  • ৬ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
ফরিদপুরের মধুখালীতে আদালতের আদেশ অমান্য করে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামী প্রদীপ কুমার বিশ্বাস ফায়ার সার্ভিসের একজন সদস্য বলে জানা গেছে। আহত গৃহবধূ তন্দ্রা মন্ডল বর্তমানে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগী তন্দ্রা মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, মধুখালী উপজেলার মথুরাপুর চরলাউজানা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পাঁচ বছর আগে স্বামী প্রদীপ কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরবর্তীতে প্রদীপ দ্বিতীয় বিয়ে করলে তন্দ্রার কোনো খোঁজখবর নিতেন না এবং তাঁর ভরণপোষণও দিতেন না। এ কারণে তন্দ্রা তাঁর বাবার বাড়িতেই থাকতেন এবং বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

তন্দ্রা জানান, গত ২৩ জুন, ২০২৫ তারিখে ফরিদপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তাঁদের একসঙ্গে সংসার করার জন্য প্রদীপকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পর তাঁর শাশুড়ি, শ্বশুর ও স্বামী প্রদীপ তাঁকে বলেন যে পরীক্ষা শেষ হলে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাবেন।

ঘটনার দিন, অর্থাৎ ২৩ জুন, ২০২৫, তন্দ্রার পরীক্ষা শেষ হলে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রদীপ তাঁকে নেওয়ার জন্য মধুখালী আসেন। মধুখালী থেকে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পথে কামারখালী ব্রিজের কাছে এসে প্রদীপ বিভিন্ন কথা বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর একটি অটোতে করে তাঁর শ্বশুর পরিমল বিশ্বাস এবং আরও তিনজন লোক সেখানে আসেন।

তন্দ্রা অভিযোগ করেন, তাঁর শ্বশুর এসেই প্রদীপকে বলেন, “এই শালির বেটিকে এখনও এভাবে রাখছিস কেন? ওকে মেরে এই মধুমতি নদীর পানিতে ফেলে দে।” এই কথা শুনে তাঁর স্বামী প্রদীপ অটোতে থাকা একটি লোহার রড দিয়ে প্রথমে তাঁর চুল ধরে পাকা রাস্তার ওপর ফেলে দেন। এরপর তাঁকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করতে চাইলে তিনি মাথা সরিয়ে নিলে রডের আঘাত তাঁর বাম কাঁধে লাগে এবং তাঁর হাড় ভেঙে যায়।

তিনি আরও জানান, এরপর তিনি চিৎকার শুরু করলে তাঁর শ্বশুর ও সাথে থাকা লোকজন তাঁকে ধরে পাকা রাস্তার পাশে ফেলে আটকে রাখে। তাঁর স্বামী প্রদীপ বিশ্বাস তাঁর তলপেটে জুতা পায়ে নির্মমভাবে আঘাত করেন। তাঁর চিৎকারে রাস্তায় চলাচলকারী কিছু লোক এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়।

পরে তন্দ্রা তাঁর স্বজনদের ফোন করলে তাঁরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে তাঁর অবস্থা গুরুতর এবং ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম ও এক্স-রে করার পরামর্শ দিয়েছেন।

মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার কবির সরদার জানান, রোগী ভর্তি আছে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

এই ঘটনায় এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন তন্দ্রার বাবা দুলাল মন্ডল। তিনি জানান, মেয়েকে চিকিৎসা করানো নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখনও থানায় যেতে পারেননি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মামলার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে প্রদীপের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মামলার তথ্য:
ফাইলিং ডেট: ০৩-০৯-২০২৩ ইং
আদালত: নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল
মামলা নম্বর: নারী ও শিশু পিটি ২২৩/২৩
ধারা: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১ (গ)
বাদী: তন্দ্রা মন্ডল, পিতা দুলাল মন্ডল, গ্রাম: মথুরাপুর চরলাউজানা, থানা: মধুখালী।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102