আইন-আদালত ডেস্ক ॥
ঢাকা, জুন ১৩, ২০২৫: চেক ডিজঅনার বা চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ও উপযুক্ত নথিপত্র থাকা আবশ্যক। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের মামলায় সফলতার মূল ভিত্তি হলো সঠিক প্রমাণ উপস্থাপন। তাই, চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি অবশ্যই সংগ্রহে রাখা উচিত।
মূল ভিত্তি: চেক ও ডিজঅনার স্লিপ
প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হলো চেক নিজেই, যা অভিযুক্ত ব্যক্তি বাদীকে দিয়েছেন। ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর যদি চেকটি “পর্যাপ্ত ব্যালেন্স নেই” উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যাত হয়, তখন ব্যাংক একটি চেক ডিজঅনার স্লিপ প্রদান করে। এই চেক এবং ডিজঅনার স্লিপ—এই দুটি নথিই মামলার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
আইনি নোটিশ ও তার প্রমাণ
চেক ডিজঅনারের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনি নোটিশ পাঠানো বাধ্যতামূলক। এই নোটিশ সাধারণত একজন আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং এর একটি কপি সংরক্ষণ করা জরুরি। অনেক সময় পত্রিকার মাধ্যমেও নোটিশ প্রকাশ করা হয়; সেক্ষেত্রে পত্রিকার কাটিং সংযুক্ত করা উচিত।
নোটিশ পাঠানোর প্রমাণ হিসেবে ডাক বিভাগের রশিদ (রিসিপ্ট) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রাপক নোটিশ গ্রহণ করেন, তাহলে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সংযুক্ত করা মামলার পক্ষে একটি শক্তিশালী দিক। অন্যদিকে, যদি নোটিশ ফেরত আসে বা গ্রহণ না করা হয়, তাহলেও রিসিপ্টটি প্রমাণ করে যে বাদী পক্ষ নিয়ম মেনে নোটিশ পাঠিয়েছিল।
লেনদেনের নেপথ্যের নথি
এছাড়াও, লেনদেনের পেছনের কারণ বা প্রেক্ষাপট যদি কোনো চুক্তিপত্র বা স্ট্যাম্পে লিখিত নথি দ্বারা প্রমাণ করা যায়, তাহলে মামলাটি আরও শক্তিশালী হয়। যেমন: ধারের চুক্তিপত্র, বিনিয়োগ চুক্তি বা অন্য যেকোনো আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত নথি। এই ধরনের লিখিত প্রমাণগুলো মামলার সত্যতা প্রমাণে সহায়ক হয়।
গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের তালিকা
চেক ডিজঅনার মামলার জন্য যে পাঁচটি নথি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো হলো:
মূল চেক, চেক ডিজঅনার স্লিপ, লিগ্যাল নোটিশের কপি, ডাক বিভাগের রিসিপ্ট (এবং যদি থাকে) প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ ও লেনদেন-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য চুক্তিপত্র
আইনজীবীরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এসব নথি যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও উপস্থাপন করতে পারলে চেক ডিজঅনার মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। সঠিক প্রমাণাদি ছাড়া এই ধরনের মামলায় জয়ী হওয়া কঠিন হতে পারে।