শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম :
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম (জিসফ) এর ৩১ সদস্য বিশিষ্ট ফরিদপুর শাখা আহ্বায়ক কমিটি গঠিত কবিতা-১ ও কবিতা-২ ফরিদপুরে আ.লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর কৃষিপণ্যের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন সালথায় বিএনপির পক্ষ থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্তু বিতরণ ঢাকার ধামরাইয়ের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত আজারবাইজানের বিমান ভূপাতিত করার দায় ক্ষমা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির আজহারীর বয়ান শুনলেন লাখ লাখ মানুষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক বিডিআরএমজিপি এফএনএফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ

শেখ পরিবারের নাম বাদ দিয়ে জেলার নামে ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৯৩ Time View

বিশেষ প্রতিনিধি
বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে দেড় ডজনের বেশি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়, যেগুলো শেখ হাসিনা কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।নিজের পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠান হলে সেখানে অনুমোদনের ক্ষেত্রে ছিল না কোনো জটিলতা। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলে পাওয়া যেত বাড়তি সুবিধা। বিশেষ করে অনুমোদন থেকে শুরু করে আর্থিক বিষয়াদিতেও মিলতো অগ্রাধিকার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর বিতর্কিত এই নামগুলো বাদ দেয়ার জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে জোর দাবি ওঠে; কিন্তু নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জটিলতা থাকায় এতে কিছুটা দেরি হয়। তবে গত ৩০ অক্টোবর প্রথম দফায় দেশের পাঁচটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম থেকে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এখনো এক ডজনের বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেগুলোর নামকরণ করা হয়েছে শেখ হাসিনা কিংবা শেখ মুজিবুর রহমান অথবা শেখ পরিবারের অন্য কারো নামে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বেসরকারি পর্যায়ের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই হয়তো নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

সম্প্রতি দেশের ছয়টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা: মো: সরোয়ার বারী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গত বুধবারের (৩০ অক্টোবর) প্রজ্ঞাপনে যেসব সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করা হলো সেগুলো হলো- কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ, মানিকগঞ্জ-এর পরিবর্তে মানিকগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ; আব্দুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ, নোয়াখালী- এর পরিবর্তে নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ; শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, জামালপুর-এর পরিবর্তে জামালপুর মেডিক্যাল কলেজ; শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, টাঙ্গাইল-এর পরিবর্তে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ, ফরিদপুর-এর পরিবর্তে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ, দিনাজপুর-এর পরিবর্তে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ।

অপর দিকে অভিযোগ উঠেছে, বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে ইউজিসি’র একটি সুবিধাবাদী চক্র কৌশলে এবং সহজে অনুমোদন পাইয়ে দেয়ার নাম করে শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন এবং অর্থও হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে ইউজিসি’র তৎকালীন সচিব ফেরদৌস জামানসহ অনেক কর্মকর্তা অতি উৎসাহে এসব নাম অনুমোদন দিয়েছিলেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতে এভাবে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নাম ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। এই নাম পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাদের মতে এসব নাম জেলার নামেই হওয়া উচিত। একই নাম কিভাবে এত বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ে কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে ইউজিসি।

অবশ্য ইউজিসি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে ১৯৯৮ সালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রতিষ্ঠা করা হয় গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকাকালে। আর শেখ হাসিনার নামে মেডিক্যাল কলেজ তিনটিও গত ১১ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালেই প্রতিষ্ঠিত। এগুলোর বাইরে মেহেরপুরে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় নামে আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শুরুতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ থাকায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হতে দেখা গেছে। তার নামে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মেরিটাইম, অ্যারোস্পেস, ডিজিটাল ইত্যাদি ইউনিভার্সিটি। সূত্র মতে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও গোপালগঞ্জে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১১), ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৩), গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৯), কিশোরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (২০২০), পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০২২), নওগাঁয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (২০২৩)। এগুলোর মধ্যে গোপালগঞ্জের ও পিরোজপুরের বিশ্ববিদ্যালয় দু’টির একই নাম- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়াও শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীর নামে জামালপুরে আছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৭), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হসপিটাল, কাশেমপুর, গাজীপুর, নবীনগর চন্দ্রা ইপিজেড রোড এবং সিলেটে আছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮)। আর ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রীর নামে নেত্রকোনায় আছে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮) ও খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০২১)। এ ছাড়া শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ নামে জামালপুর (২০১৪), টাঙ্গাইল (২০১৪) ও হবিগঞ্জে (২০১৭) তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউজিসি’র সচিব ড. মো: ফখরুল ইসলাম নয়া

ইউজিসি’র সচিব ড. মো: ফখরুল ইসলাম নয়া দিগন্তের এই প্রতিবেদককে জানান, একই ব্যক্তির নামে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকা বিব্রতকর। এটা অতীতে করা হলেও বিষয়টি ঠিক হয়নি। তবে ইতোমধ্যে আমাদের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। আমরা দেখছি কিভাবে এই নামগুলো পরিবর্তন করা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102