বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
১০ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৫ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম :
ধামরাইয়ে বিএনপির কাণ্ডারি তমিজ উদ্দিন: ঢাকা-২০ আসনে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত জলবায়ু অভিযোজনে বিনিয়োগ করলে ২০৩০ সালে পোশাক রপ্তানি ছাড়াবে ১২ হাজার কোটি ডলার তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: আজ ঢাবি ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল নির্বাচনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ বাড়াতে জাতিসংঘের নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ফিউচার বাংলাদেশ’ ধামরাইয়ে বাজারে লুটপাটের অভিযোগ নিয়ে ধূম্রজাল: ব্যবসায়ীদের দাবি ‘ঘটনা সাজানো’ কেরানীগঞ্জে ফরমালিন দিয়ে ফল পাকানোর দায়ে ৯ ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড সালথায় ৪০ পেঁয়াজ চাষিকে প্রকাশ্যে ঋণ দিল কৃষি ব্যাংক ওসমান হাদীর খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আইএইচআরসি’র প্রতিবাদী সমাবেশ ধামরাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে নবনিযুক্ত ওসির মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম (জেএসএফ) বাংলাদেশের শুভেচ্ছা

সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত সাজেদার দুই পুত্র গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৮৭ Time View

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ॥

আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেত্রী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে টানা ১৪ বছর ফরিদপুর-২ আসনের স্বঘোষিত এমপি ছিলেন বড় ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী ও ছোট ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। এই দুই সহোদর কাঁড়ি কাঁড়ি সম্পদের মালিকও বনে গেছেন। টানা ১০ বছর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও নানা দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর জনরোষে পড়ে বাবলু চৌধুরী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাঁর জায়গা দখলে নেন ছোট ভাই লাবু চৌধুরী। তাঁর বিরুদ্ধেও ভূরি ভূরি অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তিনিও মায়ের প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি ও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

জানা গেছে, ২০০৮ সালের পর বয়সের ভারে নুয়ে পড়েন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।আর মায়ের অসুস্থতাকে কাজে লাগিয়ে বাবলু চৌধুরী এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেন। স্থানীয় যুবলীগ- ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে মামা বাহিনী নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করেন তিনি। ওই বাহিনী দিয়ে নিজ দলীয় ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতনের স্টিমরোলার চালান। কেউ টু শব্দ করলে হাতুড়িপেটা করে তার হাত-পা ভেঙে পঙ্গু করে দিতেন। বাড়িঘর ভেঙেও গুঁড়িয়ে দেওয়া হতো। বাবলুর নির্দেশে শত শত মানুষ নির্যাতিত হন।

বাবলুর হাত থেকে তখন রেহাই পাননি স্থানীয় সাংবাদিকরাও। সালথা প্রেস ক্লাবের তৎকালীন সভাপতি মো. সেলিম মোল্যা ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদের ওপরও নির্যাতন করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় সাংবাদিক আবু নাসের হুসাইন ও এম কিউ বুলবুলের ওপরও হামলা করে এই মামা বাহিনী। পুলিশ প্রশাসনও বাবলুকেই এমপি ধরে হুকুম তামিল করতেন। টানা ১০ বছর মায়ের ক্ষমতাবলে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি দপ্তর থেকে কমিশন বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, টিআর- কাবিখা ও ত্রাণের প্রকল্প হরিলুট করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বাবলু চৌধুরী। ইউপি নির্বাচনেও তাঁর মনোনয়ন বাণিজ্য থেমে থাকত না। এভাবে দুর্নীতি করে ঢাকার বনানীতে একটি আলিশান আটতলা বাড়িসহ দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবলু।

বাবলু চৌধুরীর জুলুম-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ২০১৮ সালে দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। এক পর্যায়ে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তাঁর জায়গা দখলে নেন ছোট ভাই শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। তিনিও মায়ের ক্ষমতাবলে স্বঘোষিত এমপি ছিলেন। অবশ্য ২০২২ সালে ১১ সেপ্টেম্বর সাজেদা চৌধুরী মারা যাওয়ার পর উপনির্বাচনে লাবু চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনেও তিনি জেতেন।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লাবু চৌধুরী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। ভাইয়ের মতো তিনিও টানা পাঁচ-ছয় বছর সালথা- নগরকান্দার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। লাবু চৌধুরীর ঢাকার ধানমণ্ডিতে দুটি ফ্ল্যাট, উত্তরায় আট কাঠা জমিসহ, বিদেশে বাড়ি- গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।

সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মিয়া বলেন, ‘সাজেদা চৌধুরীর দুই ছেলে ১৪টি বছর সালথা ও নগরকান্দায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। দলীয় লোক হওয়ার পরও আমাদের দুই ভাইয়ের নামে ১০টি মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। জনসমাবেশে সাজেদা চৌধুরীর উপস্থিতিতে আমার বড় ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে তাঁদের সন্ত্রাসী বাহিনী।

নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরিফ বলেন, এমপি না হয়েও তাঁরা মায়ের ক্ষমতাবলে দীর্ঘ ১৪টি বছর সালথা ও নগরকান্দা শাসন করেছেন। সালথা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার বলেন, সাজেদা চৌধুরীর দুই ছেলে সালথা ও নগরকান্দাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। আমার বিরুদ্ধে ২৯টি মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য সাজেদা চৌধুরী বড় ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী ও শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102