শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন
২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম :
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম (জিসফ) এর ৩১ সদস্য বিশিষ্ট ফরিদপুর শাখা আহ্বায়ক কমিটি গঠিত কবিতা-১ ও কবিতা-২ ফরিদপুরে আ.লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর কৃষিপণ্যের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন সালথায় বিএনপির পক্ষ থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্তু বিতরণ ঢাকার ধামরাইয়ের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত আজারবাইজানের বিমান ভূপাতিত করার দায় ক্ষমা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির আজহারীর বয়ান শুনলেন লাখ লাখ মানুষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক বিডিআরএমজিপি এফএনএফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ

আসছে বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৬৩ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

রাষ্ট্র মেরামতে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করেছিলো বিএনপি। আবারো নতুন করে সংস্কার প্রস্তাব দেবে দলটি। সেগুলো নিয়ে এখন তৃণমূল ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মতবিনিময় করছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করবেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রস্তাব সারা দেশে প্রচার করা হবে। লিফলেট, বুকলেটসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হবে। এ জন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তারেক রহমান বিশ্বাস করেন এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ।

সুতরাং জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামতের ভিত্তিতেই আগামী দিনে বিএনপি সব কার্যক্রম গ্রহণ করবে। দলীয় সূত্র জানায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় প্রতিদিনই মাঠপর্যায় থেকে শুরু করে জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। এ কর্মসূচির আওতায় জনগণকে কীভাবে আরও সম্পৃক্ত করা যায়- সেসব বিষয় নিয়ে তিনি দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এই প্রস্তাবের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো- প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, বাকস্বাধীনতা, শিক্ষাব্যবস্থা, শিল্পকে শ্রমঘন করা, রাজনৈতিক সংঘাত চিরতরে বন্ধ করা।

এ ছাড়া রাষ্ট্র মেরামত তথা সংস্কারের সব বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বাংলাদেশে আর কখনো যেন রাজনৈতিক সংঘাত, কর্তৃত্ববাদী শাসন, বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করার সুযোগ ভবিষ্যতে কেউ না পায়, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবে সেই বিষয়গুলো থাকবে। ইতোপূর্বে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে আরও সংযোজন, বিয়োজন ও পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে এবারের এই রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব আনা হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের কাছে লিফলেট আকারে, মহিলাদের জন্য আলাদা করে এবং ডিপ্লোমেটদের জন্য বুকলেট তৈরি করে সরবরাহ করা হবে। জানা গেছে, রাষ্ট্র মেরামতে একটি পূর্ণাঙ্গ যুগোপযোগী সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করার লক্ষ্যে বিএনপির হাইকমান্ড তারেক রহমান ইতোমধ্যেই ছয়টি শক্তিশালী কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটিগুলো তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কমিটির কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর সেগুলোকে একত্রিত করে প্রস্তুত করা হবে দলের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রস্তাব। এরপর তা জনসমক্ষে প্রকাশের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানসহ সরকারের ছয়টি সংস্কার কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

ছয় কমিটিতে যারা আছেন : ছয়টি কমিটির মধ্যে সংবিধান পুনর্গঠন কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। সদস্য হিসেবে আছেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক সুপন ও অধ্যাপক ড. নাজমুজ জামান ভূঁইয়া ইমন। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে। সদস্য হলেন- অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদিন, বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি মোহাম্মদ রইস উদ্দিন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিচারক ইকতেদার হোসেন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসিম।

পুলিশ বিভাগ সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম। সদস্য হচ্ছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জহিরুল ইসলাম, সাবেক আইজিপি আবদুল কাইউম, সাবেক ডিআইজি খোদা বক্স ও সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান।

প্রশাসন সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে। সদস্যরা হলেন- সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আবদুল হালিম, সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ ও মনিরুজ্জামান খান।

দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে সাবেক বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি শরফুদ্দিন চাকলাদার ও বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমানের নাম রয়েছে। সদস্য হচ্ছেন- ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও সাবেক সচিব আবদুর রশিদ।

নির্বাচন কমিশন বিষয়ক সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানকে। সদস্য হচ্ছেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ ও আবদুর রশিদ। ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক উপস্থাপিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ছিল যথাক্রমে : ১. জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন। ২. সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্রসত্তা (Rainbow-Nation) ও জাতীয় সমন্বয় কমিশন (National Reconciliation commission) গঠন।

৩. অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন। ৪. আইনসভা, মন্ত্রিসভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিচার বিভাগের মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। ৫. প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা অনূর্ধ্ব পরপর দুই মেয়াদ নির্ধারণ। ৬. বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আইনসভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তন। ৭. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন। ৮. নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন। ৯. স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সব রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরণ। ১০. বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রবর্তন ও সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়ন। ১১. গণমুখী ও জনকল্যাণমূলক প্রশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন। ১২. মিডিয়া কমিশন গঠন করে তথ্য ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ। ১৩. দুর্নীতি প্রতিরোধে দৃশ্যমান কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ। ১৪. সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। ১৫. আত্মনির্ভরশীল জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন।

১৬. ধর্মীয় স্বাধীনতার সর্বোচ্চ ও কার্যকর নিশ্চয়তা প্রদান। ১৭. মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা। ১৮. প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং নবায়নযোগ্য ও মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাত আধুনিকায়ন। ১৯. জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন। ২০. প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধিকতর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা। ২১. প্রশাসন ও সেবা বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো স্বশাসিত ও ক্ষমতাবান করা। ২২. শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান। ২৩. কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বেকার ভাতা প্রবর্তন। ২৪. নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।

২৫. চাহিদা ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা। ২৬. ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এবং ‘সার্বজনীন চিকিৎসা’ ব্যবস্থা কার্যকর করা। প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশিক্ষিত নারী ও পুরুষ পল্লী স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা সুবিধা নিশ্চিত করা। ২৭. কৃষকের উৎপাদন ও বিপণন সুরক্ষা দিয়ে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। ২৮. সড়ক, রেল, নৌপথের আধুনিকায়ন ও বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। ২৯. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ এবং নদীশাসন ও খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা। ৩০. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শক্তির উন্নয়ন ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। ৩১. যুগোপযোগী, পরিকল্পিত, পরিবেশবান্ধব আবাসন এবং নগরায়ণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102