শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম :
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম (জিসফ) এর ৩১ সদস্য বিশিষ্ট ফরিদপুর শাখা আহ্বায়ক কমিটি গঠিত কবিতা-১ ও কবিতা-২ ফরিদপুরে আ.লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর কৃষিপণ্যের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন সালথায় বিএনপির পক্ষ থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্তু বিতরণ ঢাকার ধামরাইয়ের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত আজারবাইজানের বিমান ভূপাতিত করার দায় ক্ষমা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির আজহারীর বয়ান শুনলেন লাখ লাখ মানুষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক বিডিআরএমজিপি এফএনএফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ

তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৭২ Time View

রাজু আহমেদ,  প্রাবন্ধিক।

আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহকে ভয় করেন! আল্লাহর ক্রোধকে ভয় করেন! কারো দোকানের একটা চকলেট কিংবা কারো ঘরের একটা সিটকানি অন্যায়ভাবে নিলে কিংবা ভাঙলে আল্লাহর কাছে কৈফিয়ত দিতেই হবে। কারো সম্পদ লুট করা, কারো ঘরে আগুন দেওয়া কিংবা কোন ধর্মের উপাসনালয় ভাঙা তো মস্তবড় অন্যায়। এসব অন্যায় করলে শেষ বিচারে পৌঁছার আগেই তথা জীবদ্দশাতেই কেউ আপনার ঘর পোড়াবে, হাত-পা ভাঙবে এবং সম্পদ লুট করবে। সম্মান নিলামে তুলবে রাস্তায়। দুনিয়ায় কোন অপরাধ প্রতিকারবিহীন যায় না। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ কিংবা ভিন্নমত/জাত নির্যাতন করার শাস্তি সময়ের আবর্তনে ফেরে। আরও তীব্র হয়ে ঘোরে। পাঁচ/দশ বছরের আবর্তনে যে প্রতিশোধ প্রত্যাবর্তন করে তা মহাকালের হিসেবে খুব বেশি সময়? চোখের পলক, এইতো সেদিন এবং আজ- বহুদূরে?

আজ যাদের ক্ষতি করছেন তাদের ক্ষত ও ব্যথা অনুভব করার বোধ ও শিক্ষা আপনার আপাতত নাই বটে। যদি মনুষ্যত্ব বোধ একবার জাগত তবে তারো চার পয়সার ক্ষতি করতে পারতেন না। দখল করতেন না কারো ভিটেমাটি।  কারো লাঠালাঠির প্রশ্ন হতো অবান্তর। সীমালঙ্ঘন করে যদি অন্যায় করেন তবে নিজেকে যখন ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আবিস্কার করবেন তখন উপলব্ধি করবেন ক্ষতির ক্ষত কতখানি পোড়ায়। কাজেই সুযোগ থাকার পরেও ভুলেও কারো এক পয়সার সম্পদের দিকে হাত বাড়াবেন না। যা কিছু অবৈধভাবে, লোভে কিংবা অপক্ষমতায় অর্জিত হয় তা থাকে না বরং ভালো পথেও যা অর্জিত তার সমেত ধ্বংস হয়। মানুষের ঘৃণা, বদদোয়া এবং অ়ভিশাপের অংশ হবেন না। এই একটা ক্ষুদ্র জীবন পবিত্র রাখাটা জরুরি। এই দেশের সম্পদে সবার হিস্যা আছে। তা থেকে সামান্যতমও যদি ধ্বংস কিংবা কুক্ষিগত করেন তবে তার ক্ষতিপূরণ জীবদ্দশাতেই দিতে হয়। যখন কিছুটা মানসম্মান হবে তখন তা রাস্তায় লুটপাট হবে!

কারো অধিকার হরণের প্রায়শ্চিত্ত কেবল সম্পদ থেকে পূরণ হয় না বরং সম্মান থেকেও যায়। বাগে পেয়ে অহেতুক কাউকে আঘাত করলে, অন্যায়ভাবে কিছু ভোগদখল করলে এবং জাতীয় সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত করলে আপনার জীবন থেকে সেটার ক্ষতিপূরণ পুষিয়ে নেওয়া হয়। সর্বনাশ যে কতখানি বিস্তৃত হয় তা সুদিনে থেকে আন্দাজ করতেও পারছেন না! যার যাচ্ছে তার দিকে তাকিয়ে শিক্ষা নিন। কারো দুর্দিনের দুর্দশায় নিজেকে কল্পনা করুন। অবৈধভাবে অর্জিত কিছু যদি খাদ্য হিসেবে কিংবা সঞ্জীবনী হিসেবে শরীরে প্রবেশ করে এবং তার হিস্যা রক্তে মেশে তবে মানুষের মত মানুষ হওয়া মুশকিল। তখন বংশগতি অধঃগতিত হয়। ভয় করুন সেই দিনকে যেদিন সরিষা পরিমাণ আমলেরও পরিমাপ করা হবে। যেদিন পুরস্কার এবং শাস্তি প্রদানে কোনরূপ অন্যায্যতা হবে না।

কারো সম্পদ লুণ্ঠন, কারো সম্মান হরণ- এসব বিবেকবানের কর্ম নয়। আমাদের সভ্য হওয়া জরুরি। থা ও আচরণে আরও মার্জিত এবং বিনীত হতে পারি। সুযোগের অভাবে সৎ থাকার যে নগ্ন চিত্র দেখেছি তা জাতি হিসেবে লজ্জিত করেছে। কারো ওপর ক্ষোভ থাকতে পার, কেউ ভুল করতে পারে তাই বলে মনুষ্যত্ব ও মানবিকতা হারানোর মত উম্মাদ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া, শোধ তোলা কিংবা চেপে মারা কোনভাবেই শুভলক্ষণ নয়। সেই জাতের শাসক তেমনি হয় যেই জাত যেমন! ক্ষণিকের সুযোগে আমরা যত অপকর্ম প্রকাশ্যে এনেছি তাতে আমাদের সেবা ও শাসনে ভালো শাসক পাওয়ার ভাগ্য কতখানি সৌভাগ্যের হবে তা প্রশ্নবিদ্ধ! গণলুট অগ্নিসংযোগ এবং গণ আক্রমন এসব সভ্য সমাজের মানুষ থেকে আকাঙ্ক্ষিত নয়। বর্বর যুগে বাস করলে এসব হয়তো চক্ষুশূল হতো না। কারো বিবেককে দহনও করতো না। তখন বড় বাঁচা বেঁচে যেতাম! কেন বিবেক জ্বালাতন করে?

কেউ অন্যায়ভাবে ভুগিয়েছে বলে আমরাও যদি তাকে ভুল উপায়ে শাস্তি দেই তবে অধম-উত্তমের তফাৎ রইলো কোথায়? বরং আচরণ ও স্বভাব, বিশ্বাস ও কর্ম এমন হওয়া উচিত যাতে বুক ফুলিয়ে বলতে পারি, ‘তুমি অধম’ তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন!’ ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করতে হয় আর মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকতে হয়। আমরা উল্টো পথে চলছি? কেউ আমাকে গালি দিয়েছিল তাই সুযোগ পেয়ে তার জিহ্বা ছিঁড়ে নিচ্ছি! কেন ভাবছি না, যেদিন তার সময় আসবে সেদিন সে আমার কণ্ঠনালী ছিঁড়ে নেবে! আরেকটু বিবেকবান হই, কিছুটা ধৈর্য ধরি। সংযম ও সহনশীলতা না থাকলে সে জাতি সভ্য হয় না। শিক্ষিত এবং সভ্যতা- দুইটা ভিন্ন বিষয়। কথিত শিক্ষিত হয়েছি তবে সভ্য হতে পেরেছি? কারো সম্পদের ক্ষতি, কারো সম্মানের হানি এবং কারো নিরাপত্তার হুমকি যাতে না হই। অন্যায় করে এই আলোতে মুক্তি পেতেও পারি তবে একজন সবকিছু দেখছেন! তিনি ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না! বিবেককে শাণিত করে তবেই যেন কাজ করি!

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102