লালমনিরহাট প্রতিনিধি ॥
ভূমিহীন ও গৃহহীনদের শুধু মাথা গোজার ঠাঁই নয়, তাদের নানামুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে করা হবে আত্মনির্ভরশীল। দেশের একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবে না।
মঙ্গলবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে সংযুক্ত থেকে গৃহহীনদের ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সরাসরি উপকারভোগী সঙ্গে কথা বলার সময় একথা বলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী ওই মহিষামুড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া বাবু মিয়া ও সাহেরুল বেওয়ার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। কথা বলার এক পর্যায়ে ঘর পাওয়া উপকারভোগীর সাথে প্রধানমন্ত্রীও আবেগ আপ্লূত হয়ে যান। পরে প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা উপভোগ করেন।
গৃহ ও জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহর সভাপতিত্বে লালমনিরহাট ৩ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড মতিয়ার রহমান,লালমনিরহাট ২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহম্মেদ, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেনসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ঘর পেয়ে বেজায় খুশি লালমনিরহাটের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষেরা। সহায়-সম্বলহীন এসব মানুষ জমিসহ ঘর পেয়ে এখন পরিবারে স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন। এক সময় যাদের কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, ছিল না কোনো জমি, তারা আজ জমিসহ পাকা ঘরের মালিক হলো।। এখন তাদের অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে না। একখণ্ড জমি পেয়ে সেখানে সবজি চাষ শুরু করেছে। তাদের দুই শতাংশ জমি কবিলত রেজিস্ট্রেশন ও মিউটেশন সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে। এরইমধ্যে প্রত্যেকটি ঘরে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
কথা হয় ঘর পাওয়া ফরিদা বেগমের (২০) সাথে। তিনি নতুন বাড়ির আঙিনায় সেলাই মেশিন দিয়ে ঈদ উপলক্ষে কাপড় সেলাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাঁর চোখে মুখে আনন্দ। ঘর পেয়ে সে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
ঘর পেয়ে খুশি ষাটোর্ধ হাজরা বেগম বলেন, তিস্তা নদীতে একে একে পাঁচবার ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। পরে বাঁধের রাস্তায় একচালা ঘর তুলে ছিলাম। এখন সরকার পাকা বাড়ি দিছে। এই বাড়িতে আমরা বাকী জিবনটা কাটবে। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
জীবনের ক্লান্তি লগ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঘর পেয়ে আবেগে আপ্লুত বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম। তিনি জানান, স্বপ্নেও ভাবি নাই, নিজের পাকা বাড়ি হবে। সবকিছু স্বপ্নের যেন মতো লাগছে।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় পঞ্চম পর্যায় (২য় ধাপে) ১হাজার ৬টি ঘরের মধ্যে লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ১৭, আদিতমারী উপজেলায় ১৪২, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৫৮০জন, হাতীবান্ধা উপজেলায় ১২৬, পাটগ্রাম উপজেলায় ১৪১টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ২শতাংশ জমির কবুলিয়াত ও গৃহ হস্তান্তর করা হয়।