বিশেষ প্রতিবেদক ॥
ঢাকা: প্লট ও ফ্ল্যাটের হস্তান্তর (বিক্রয়, দান বা বন্ধক) প্রক্রিয়াকে সহজ, দ্রুত ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে নতুন সাতটি বিধিমালা কার্যকর করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গত ১০ নভেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হওয়া এই বিধিমালার মূল উদ্দেশ্য হলো দীর্ঘদিনের জটিলতা ও দুর্নীতি দূর করে মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে আরও জনবান্ধব করা।
নতুন বিধিমালার প্রধান দিকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. লিজদাতার অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা বাতিল
উন্নয়নকৃত ও বরাদ্দকৃত আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটের হস্তান্তর, ক্রয়, দান, বন্ধক এবং দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা আর থাকবে না। তবে প্লট বা ফ্ল্যাটের ব্যবহার শ্রেণি পরিবর্তন, আয়তন পরিবর্তন বা একাধিক প্লট একত্রিকরণের মতো বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়ার নিয়ম বহাল থাকবে।
২. রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ
ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। ফি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হবে:
প্লট বা ভবনের ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ২%।
শুধুমাত্র প্লট বা ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৫%।
একই হারে হস্তান্তর ফি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (NTR) হিসেবে আদায় করা হবে।
৩. মালিকানা রেকর্ড হালনাগাদ ও জরিমানার বিধান
হস্তান্তরের ৯০ দিনের মধ্যে বিক্রেতা এবং দলিলগ্রহীতাকে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানে দলিল ও নামজারির কপি দাখিল করতে হবে।
জরিমানা: নির্ধারিত সময়ে দাখিল না করলে দৈনিক ৫০ টাকা হারে, সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হবে।
হালনাগাদ: দাখিলের ৩০ দিনের মধ্যে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানকে মালিকানা রেকর্ড হালনাগাদ করে ক্রেতাকে ই-মেইল বা অন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে তা অবহিত করতে হবে।
৪. লিজ মেয়াদ শেষে স্বয়ংক্রিয় নবায়ন
৯৯ বছরের লিজ মেয়াদ শেষ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়নকৃত হিসেবে গণ্য হবে এবং এ ক্ষেত্রে নতুন করে হস্তান্তর ফি আদায় করা হবে না। তবে লিজদাতার অনুমতি ছাড়া প্লটের বিভাজন, একত্রিকরণ বা মাস্টারপ্ল্যানের পরিবর্তন করা যাবে না।
৫. অন্যান্য প্লটের ক্ষেত্রে পূর্বের নিয়ম বহাল
প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প প্লট বা ফ্ল্যাটের হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নিয়মাবলী বহাল থাকবে।
নতুন এই বিধিমালা কার্যকর হওয়ায় দেশের আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সহজ হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।