নিজস্ব প্রতিবেদক, অনলাইন ডেস্ক ॥
রাজধানীর পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করতে শ্যুটারদের সঙ্গে মূল অভিযুক্ত ‘পাতা সোহেল’ মাত্র ৩০ হাজার টাকার চুক্তি করেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এই কিলিং মিশনের নেতৃত্বে ছিলেন ‘ভাগিনা মাসুম’।
কিবরিয়া হত্যার সঙ্গে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী মনির হোসেন ওরফে পাতা সোহেল এবং তার সহযোগী সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজনকে গ্রেফতারের পর গতকাল বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।
গ্রেফতার ও হত্যার রহস্য উন্মোচন
র্যাব জানায়, সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি র্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) গভীর রাতে আশুলিয়ার বিরুলিয়া ও টঙ্গীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পাতা সোহেল ও সুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মাহবুব আলম জানান, পাতা সোহেল ও সুজনই এই পুরো কিলিং মিশন সাজান।
৩০ হাজার টাকার চুক্তি: পাতা সোহেল শ্যুটার জনি, ‘কাল্লু’ ও রোকনকে হত্যার জন্য ভাড়া করেন। শ্যুটার জনির সঙ্গে মোট ৩০ হাজার টাকার চুক্তি হয় এবং তাকে এক হাজার টাকা অগ্রিমও দেওয়া হয়েছিল।
অস্ত্র সরবরাহ: কিলিং মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্রও পাতা সোহেল সরবরাহ করেন।
নেতৃত্বে মাসুম: তবে পুরো হত্যার নেতৃত্বে ছিলেন ‘ভাগিনা মাসুম’।
রাজনৈতিক কোন্দল ও মাদক নিয়ন্ত্রণই কারণ
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম আরও জানান, এক সময় হত্যায় জড়িতদের সঙ্গে কিবরিয়ার সখ্যতা ছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
প্রাথমিক তদন্তে র্যাব নিশ্চিত হয়েছে যে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কোন্দল, এলাকায় চাঁদাবাজি এবং মাদকের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই গোলাম কিবরিয়াকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
মামলা ও অভিযান অব্যাহত
গত সোমবার সন্ধ্যায় পল্লবীর একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে ঢুকে প্রকাশ্যে গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। এ সময় স্থানীয় জনতার ধাওয়া খেয়ে শ্যুটার জনি ভূঁইয়া আটক হন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই র্যাব দ্রুত অভিযানে নামে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার কিবরিয়ার স্ত্রী বাদী হয়ে পল্লবী থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও আটজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃতরা ছাড়াও হত্যায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের সন্ধানে র্যাবের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক।