নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। দলের প্রস্তুতি যেমনই হোক না কেন, দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে নির্বাচন যথা সময়ে হতে হবে, বলে জানিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি গতকাল রাজধানীর বাংলামোটরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।
প্রতীক নিয়ে নমনীয়তা, জোটে থেকেও নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন
নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে দলটির অবস্থানে নমনীয়তা এসেছে। প্রথমে ‘শাপলা’ প্রতীক চাইলেও এখন নির্বাচন কমিশনের তফসিলভুক্ত ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিতে রাজি হয়েছে এনসিপি। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ তথ্য জানান। এই সময় দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপি জোটে ভোট করলেও নিজ দলের ‘শাপলা কলি’ প্রতীকেই নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছে। চলতি মাসেই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংস্কার-বিরোধী দলের সঙ্গে জোট নয়, ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে ক্ষোভ
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম দৃঢ়ভাবে জানান, সংস্কারের বিপক্ষে থাকা কোনো দলের সঙ্গে এনসিপি জোটে যাবে না। মৌলিক দাবিগুলোর সঙ্গে যাদের কাছাকাছি অবস্থান, এমন দলের সঙ্গে সমঝোতা বা ঐক্যের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
‘জুলাই সনদ’ নিয়ে তিনি বলেন, কোনো একটি দলের চাপে সরকার বারবার সনদের টেক্সট পরিবর্তন করেছে। তিনি বাস্তবায়ন আদেশের প্রথম খসড়ার বিধানকে সমর্থন করেন, যেখানে ২৭০ দিন পর সংস্কার প্রস্তাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যত্যয় হলে সমর্থন পুনর্বিবেচনার কথা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, যেদিন জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়, সেদিনই জাতীয় অনৈক্যের সূচনা হয়েছে এবং স্বাক্ষরকারীরা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তবে এখনো ঐক্যের সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন।
আইন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিএনপিকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ এনসিপির
এদিকে, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে বিএনপিকে সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ তুলেছে এনসিপি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান জানতে চেয়ে এনসিপি আইন উপদেষ্টার কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে। গতকাল এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
চিঠিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন নিয়ে বিএনপিকে দেওয়া আইন উপদেষ্টার ব্যক্তিগত আশ্বাস রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতার পরিপন্থি।’