বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৪ অপরাহ্ন
৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম :
আইএলওর ৩ কনভেনশনে বাংলাদেশের স্বাক্ষর; শ্রমিক অধিকার আদায়ে দিনটি স্মরণীয়: প্রধান উপদেষ্টা দাবি আদায়ে অনশনে শিক্ষকেরা, অসুস্থ কয়েকজন কুড়িগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ উলিপুর থানার ওসি জিল্লুর রহমান স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের ঘোষণা বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি মিজানুর রহমান মিজুর আহ্বান জাতীয় নির্বাচন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা আজ ইসিতে ইসলামপুরে শরীরে প্রাণীদের মত লোম নিয়ে তিনটি পরিবারের মানবেতর জীবন-যাপন ইসলামী ব্যাংকে লেনদেন বন্ধের হুমকি: চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা ঢাকা শহর এইচএসসি ও সমমানের ফল পুনর্নিরীক্ষণ শুরু: প্রতি পত্রে ফি ১৫০ টাকা, আবেদন ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত চাকসু নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় ছাত্রশিবিরের: ভিপি-জিএসসহ ২৪ পদে বিজয়, ছাত্রদলের সান্ত্বনা এজিএস

আইএলওর ৩ কনভেনশনে বাংলাদেশের স্বাক্ষর; শ্রমিক অধিকার আদায়ে দিনটি স্মরণীয়: প্রধান উপদেষ্টা

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১ Time View

নিজস্ব পতিবেদক ॥
ঢাকা, ২২ অক্টোবর: আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ দিনটি বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এই তিনটি কনভেনশনের অনুসমর্থন পত্রে স্বাক্ষর করেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলওর ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশের মর্যাদা লাভ করল।

স্বাক্ষরিত কনভেনশনগুলো হলো:
১. পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কনভেনশন, ১৯৮১ (নং-১৫৫)

২. কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারণামূলক কাঠামো কনভেনশন, ২০০৬ (নং-১৮৭)

৩. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ক কনভেনশন, ২০১৯ (নং-১৯০)

কনভেনশন তিনটির মধ্যে কনভেনশন ১৮৭ ও কনভেনশন ১৫৫ আইএলওর মৌলিক কনভেনশন। ২০২২ সালে এ দুটিকে মৌলিক কনভেনশন হিসেবে গ্রহণ করে আইএলও।

প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্য:
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির কথা স্মরণ করে বলেন, ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর তৎকালীন সরকার সব কিছুতে রাজি হলো। কিন্তু যা করবে বলেছিল সেগুলোর কিছুই হয়নি। শুধু ‘হচ্ছে, হবে’ করেই চলছিল। আমরা বললাম যে ‘হচ্ছে-হবে’ আর নয়, এটা আমরা করেই যাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমার প্রথম দৃষ্টি ছিল শ্রম অধিকারে। বারবার বৈঠক করলাম। সবখানে বলতে থাকলাম যে এটা করতেই হবে। এটাতে স্বাক্ষর করা মানে আমাদের সবার উপকার।’ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোর পরিশ্রমের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এক দীর্ঘ যাত্রার পর গন্তব্যে পৌঁছালাম। এটা প্রথম ধাপ উত্তরণ হলো। কাগজে সই করেই কাজ শেষ না, কাজ কেবল শুরু। যে ওয়াদা করলাম সেটা পালন করতে হবে। কনভেনশনে কী কথা বলা আছে, কোন অধিকারের কথা আছে সেটা সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সবাইকে সচেতন করতে হবে।’

ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি থেকে যে যাত্রা শুরু হলো আজ তা একটা গন্তব্যে পৌঁছালো, অন্তত কাগজের অংশটুকু শেষ করলাম। রানা প্লাজার শ্রমিকরা তাদের জীবন দিয়ে যে দায়িত্ব আমাদের ওপর দিয়ে গেছে সেটার এক ধাপ পার হলো। আমি নিজের কাছে নিজে ওয়াদা করেছিলাম যে, এটা করবই। আজ আনন্দ পাচ্ছি যে একটা পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছি।’

শ্রম উপদেষ্টার বক্তব্য:
শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আজকে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এটি আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রধান উপদেষ্টা সার্বক্ষণিক আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই আন্তরিকভাবে কাজ করছে।’

আইএলওর অভিনন্দন:
শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন স্বাক্ষর করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনোন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার, শ্রমিক ও আইন প্রয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে কনভেনশনগুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আইএলও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। তিনি আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি শ্রম সনদ (লেবার চার্টার) গ্রহণেরও পরামর্শ দেন।

কনভেনশন স্বাক্ষরকালে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া, বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনোনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার উল্লিখিত তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন শ্রমিকদের সুরক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন, যা শ্রম খাতের সব সামাজিক অংশীদারদের আন্তর্জাতিক শ্রমমান যথাযথভাবে অনুসরণ নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102