বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
২৪শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম :
সত্যের বিজয় ঐতিহাসিক মাইলফলক: ইউনেস্কো সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত বাংলাদেশ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তির দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ভাবনা: শিক্ষকের মর্যাদা বাড়াতে হবে, নয়তো থমকে যাবে জাতির অগ্রগতি সাংবাদিকদের সপ্তাহে দুই দিন ছুটির দাবি, সঙ্গে ১০ দফা প্রস্তাব বিএফইউজে’র ফরিদপুর র‌্যাব ১০এর অভিযানে ২১ কেজি গাঁজাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার শিক্ষক বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপে ঢাকাসহ দেশজুড়ে বৃষ্টি, বাড়তি সতর্কতা জারি বিসর্জন ও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে শেষ হলো দূর্গা পূজা ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক আর নেই

মহানবী (সা.)-এর জীবন: সংক্ষিপ্ত অবলোকন

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২৪ Time View

অনলাইন সংস্করণ, ঢাকা ॥
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র জীবন ছিল ঘটনাবহুল ও তাৎপর্যপূর্ণ। ৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার মক্কায় তাঁর জন্ম হয়। জন্মের আগেই তিনি পিতৃহারা হন। তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব তাঁর নাম রাখেন মুহাম্মদ। প্রথমে তিনি মা আমেনা এবং এরপর আবু লাহাবের দাসী সোয়াইবার দুধ পান করেন। তৎকালীন আরবের প্রথা অনুযায়ী, শৈশবে তিনি দুধমাতা হালিমা সাদিয়ার (রা.) কাছে তায়েফে বড় হন।

তাঁর শৈশবের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বক্ষ বিদীর্ণের ঘটনা। ছয় বছর বয়সে তিনি মাকে হারান। এরপর তাঁর দাদা এবং আট বছর বয়সে দাদার মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিব তাঁর অভিভাবক হন। ১২ বছর বয়সে সিরিয়া সফরের সময় ধর্মযাজক বুহাইরা তাঁর মধ্যে নবুয়তের লক্ষণ দেখতে পান।

২৫ বছর বয়সে তিনি হযরত খাদিজা (রা.)-কে বিয়ে করেন। ৩৫ বছর বয়সে কাবাঘর সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে সৃষ্ট বিবাদ অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে সমাধান করে তিনি একটি ভয়াবহ যুদ্ধ থামিয়ে দেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁর সততা ও নিষ্ঠার কারণে তিনি ‘আল-আমিন’ উপাধি লাভ করেন।

৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ করেন এবং সুরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাজিলের মাধ্যমে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয়। প্রথম তিন বছর তিনি গোপনে ইসলাম প্রচার করেন, এবং এরপর প্রকাশ্যে দাওয়াতের কাজ শুরু করেন। পঞ্চম বছর কাফেরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মুসলমানরা দুবার হাবশায় হিজরত করেন। ষষ্ঠ বছর হযরত হামজা (রা.) এবং হযরত ওমর (রা.) ইসলাম গ্রহণ করলে ইসলামের শক্তি বৃদ্ধি পায়।

নবুয়তের সপ্তম বছর থেকে দশম বছর পর্যন্ত মহানবী (সা.) ও তাঁর সাহাবিরা কুরাইশদের সামাজিক বয়কটের শিকার হন। এই দশম বছরেই তিনি তাঁর প্রিয় স্ত্রী খাদিজা (রা.) ও চাচা আবু তালিবকে হারান। এ কারণে এই বছরটি ‘দুঃখের বছর’ নামে পরিচিত। একই বছরে তিনি তায়েফে নির্মমভাবে আক্রান্ত হন।

নবুয়তের বারোতম বছরে মেরাজ সংঘটিত হয় এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। এ বছর মিনার আকাবায় প্রথম শপথের মাধ্যমে মদিনায় হিজরতের পথ তৈরি হয়। পরবর্তী বছর তিনি হযরত আবু বকর (রা.)-কে সঙ্গে নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন।

মদিনায় হিজরতের পর তাঁর মাদানি জীবনের শুরু হয়। সেখানে তিনি মদিনা সনদ তৈরি, মসজিদে নববী নির্মাণ, এবং আনসার-মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করেন। হিজরি দ্বিতীয় বর্ষে কেবলা পরিবর্তন, বদর যুদ্ধ, এবং রোজা, জাকাত, ঈদ ও কোরবানির বিধান নাজিল হয়। তৃতীয় হিজরিতে ওহুদ যুদ্ধ এবং মদ ও সুদ হারাম ঘোষিত হয়। ষষ্ঠ হিজরিতে হুদাইবিয়ার সন্ধি এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ইসলামের দাওয়াত পাঠানো হয়।

অষ্টম হিজরিতে সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়, যা ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দশম হিজরিতে তিনি জীবনের শেষ বিদায় হজ পালন করেন এবং তাঁর বিখ্যাত ভাষণ দেন। এই হজের সময়ই ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবনবিধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

একাদশ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার মহানবী (সা.)-এর জীবনাবসান ঘটে। তাঁর পবিত্র জীবন মানবজাতির জন্য এক অনন্য আদর্শ। এই সংক্ষিপ্ত বিবরণটি তাঁর জীবনের প্রধান প্রধান ঘটনার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র মাত্র। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নির্ভরযোগ্য সিরাত গ্রন্থ অধ্যয়ন করা প্রয়োজন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102