বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১০ পূর্বাহ্ন
২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম :
ফটিকছড়িতে নদী-খালে বিষ দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয়, ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস ফরহাদ ও এজিএস মহিউদ্দীন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা, ডাকসুর ভিপি হলেন সাদিক কায়েম ধামরাইয়ের আমিন মডেল টাউনে শেয়ার বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ ‎‎তিস্তা নদীতে সরকারি বাঁধের নিচে অবৈধ বালু উত্তোলন: ধ্বংসের মুখে কোটি টাকার স্প্যার বাঁধ ঢাবির ভোটকেন্দ্রে মোবাইল, ব্যাগসহ যেসব জিনিস বহনে নিষেধাজ্ঞা ফটিকছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ আটক ১ বান্দরবানে জশনে জুলুছে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন আমিন মডেল টাউন ও আমিন গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতারককে সহযোগিতা ও ন্যায় বিচারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ ৪ ; মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভুক্তভোগী জাতীয় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ: গেজেট প্রকাশ করলো নির্বাচন কমিশন

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয়, ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস ফরহাদ ও এজিএস মহিউদ্দীন

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। গতকাল দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হলেও, মধ্যরাতে ফলাফল ঘোষণার পর উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের বিভিন্ন পদে ফলাফল ঘোষণা শুরু হলে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ—সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস)-এ বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা।

ভিপি পদে সাদিক কায়েম, জিএস পদে এস এম ফরহাদ এবং এজিএস পদে মহিউদ্দীন খান জয়লাভ করেছেন। মধ্যরাতে ফল ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এসময় তাঁরা ‘সাদিক কায়েম, ফরহাদ, নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর’ স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখরিত করে তোলেন।

অন্যদিকে, নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত কারচুপির ফলাফল দুপুরের পরপরই অনুমান করেছি। এটি একটি পরিকল্পিত প্রহসন।’ তবে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন এটিই তাঁদের রায়, তবে এই রায়কে আমি সম্মান জানাই। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষমাণ।

রাত আড়াইটায় প্রাপ্ত ফলাফল অনুসারে, অমর একুশে হলে ডাকসুর ভিপি পদে সাদিক কায়েম ৬৪৪, আবিদ ১৪১, জিএস পদে ফরহাদ ৪৬৬, বাকের ১৮৭, হামিম ১৮০ এবং এজিএস পদে মহিউদ্দীন ৫২১, মায়েদ ১৪১, মুদ্দাসসির ১০১ ভোট পেয়েছেন। সুফিয়া কামাল হলে সাদিক কায়েম ১২৭০, আবিদ ৪২৩, উমামা ৫৪৭, জিএস পদে ফরহাদ ৯৬৪, মেঘ মল্লার ৫০৭, হামিম ৪০২, এজিএস পদে মহিউদ্দীন ১১৩৫, মায়েদ ৩৯৭ ভোট পেয়েছেন। ফজলুল হক মুসলিম হলে ভিপি পদে সাদিক কায়েম ৮৪১, আবিদুল ১৮১, জিএস পদে হামিম ২২৮, ফরহাদ ৪৮৯, বাকের ৩৪৫, এজিএস পদে মহিউদ্দীন ৭০৫ ভোট পেয়েছেন। জসীমউদ্দিন হলে ভিপি পদে সাদিক ১২০০, আবিদ ৪০০। শহীদুল্লাহ হলে ভিপি পদে সাদিক ৯৬৬, আবিদ ১৯৯, উমামা ১৪০, আবদুল কাদের ৫৬, জামাল ২৬ ভোট পেয়েছেন। জিয়া হলে সাদিক কায়েম ৮৪১, আবিদুল ১৮১, আবদুল কাদের ৪৭, উমামা ১৫৩ ভোট পেয়েছেন। অন্যান্য হলে ভোট গণনা চলছিল।

এর আগে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর সন্ধ্যা থেকে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। রাত হওয়ার পর ধীরে ধীরে বিক্ষোভের মাত্রা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি ছিল থমথমে। ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায় যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল বিকাল থেকে ক্যাম্পাস এলাকায় জড়ো হতে থাকেন জামায়াত-শিবির, বিএনপিসহ এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যার পর থেকে নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। এ ছাড়া শাহবাগ মোড়, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকায় দুই দলের নেতা-কর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এসব এলাকায় নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় ক্যাম্পাস এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থমথমে। রাত ৮টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ফলাফল ঘিরে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।

এবারের ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটারের ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ৮টি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোট গ্রহণ চলে। ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোনো প্রকার বিধিনিষেধ ছাড়াই তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন, বিজয়ী করেছেন ছাত্র সংসদে তাঁদের প্রতিনিধি। এই প্রতিনিধিরাই আগামী এক বছর শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলবেন।

ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, ইতোপূর্বে অন্য কোনো ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রছাত্রীদের এতটা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়নি।

বিকাল ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার পর শুরু হয় গণনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের বাইরে স্থাপিত বড় এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি ভোট গণনা প্রদর্শন করা হয়। প্রথমবারের মতো ভোট গণনা সরাসরি দেখার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। গতকাল রাত সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোট গণনা চলছিল।

গতকাল ক্যাম্পাসে সরেজমিনে দেখা গেছে, সকালে ভোট শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রছাত্রীরা সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে যান। একে একে প্রবেশ করেন বুথের ভিতরে। মোট ছয়টি ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার ছাত্রছাত্রীরা পেয়েছেন আট মিনিট সময়। ভোট শেষ করে সহাস্যেই বের হন তাঁরা। দীর্ঘদিন পর ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ছাত্রছাত্রীরা। আবাসিক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সমানতালে ভোট উৎসবে অংশ নেন অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাও। পুরুষ ভোটারদের পাশাপাশি নারী ভোটারদেরও উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

ডাকসু নির্বাচনে কার্জন হল কেন্দ্রে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল, ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দেন। একইভাবে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হল; ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে রোকেয়া হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল; সিনেট ভবন কেন্দ্রে স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, বিজয় একাত্তর হল; উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সূর্য সেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল, কবি জসীমউদদীন হল; ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্রে কবি সুফিয়া কামাল হল এবং ইউল্যাব স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দেন। কার্জন হল কেন্দ্রে সকাল ৮টায় প্রথম ভোট দেন ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল আলিম। পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদান শেষে ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

ভোট গ্রহণ শেষে বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সাংবাদিকদের জানান, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনে স্বচ্ছতার কোনো ঘাটতি ছিল না।

বিকালে নির্বাচন কমিশন জানায়, ডাকসু নির্বাচনে ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এর মধ্যে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ৮০.২৪ শতাংশ, অমর একুশে হলে ৮৩.৩০ শতাংশ, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৮১.৪৩ শতাংশ, জগন্নাথ হলে ৮২.৪৪ শতাংশ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ৮৪.৫৬ শতাংশ, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৮৩ শতাংশ, রোকেয়া হলে ৬৫.৫০ শতাংশ, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ৬৮.৩৯ শতাংশ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৬৭.০৮ শতাংশ, স্যার এ এফ রহমান হলে ৮২.৫০ শতাংশ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৮৩.৩৭ শতাংশ, বিজয় একাত্তর হলে ৮৫.০২ শতাংশ, সূর্য সেন হলে ৮৮ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৭৫ শতাংশ, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৮৭ শতাংশ, কবি জসীমউদ্দীন হলে ৮৬ শতাংশ, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৬৪ শতাংশ ও শামসুন নাহার হলে ভোট পড়েছে ৬৩.৬৭ শতাংশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রুটের বাসগুলো অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে আসতে থাকে। সকালের দিকে ভোট কেন্দ্রে বেশি দেখা যায় অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের। সকাল ১০টার পর থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। এ সময় কেন্দ্রগুলোতে প্রার্থীদের নিয়ম না মেনে ভোটারদের লাইনে প্রচারণা করতেও দেখা যায়।

নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটার স্লিপ প্রদান করতে পারবেন। তবে ভোট কেন্দ্রের বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিতরণ করা যাবে না। নির্বাচন চলাকালীন এই বিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষ থেকে। ভোটারদের লাইনে গিয়েও কোনো কোনো প্রার্থীকে ভোট চাইতে দেখা গেছে। কমিশনের এমন নির্দেশনা উপেক্ষা করে এদিন সকাল থেকে প্রায় প্রতিটি হলের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রচারণা করতে দেখা যায় অনেক প্রার্থীকে। তবে এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি নির্বাচন কমিশনকে।

ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্যানেলের প্রার্থীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ইউল্যাব কেন্দ্র থেকে তাঁদের এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে।

ডাকসু নির্বাচনে টিএসসির কেন্দ্রে এক ভোটারকে দেওয়া ব্যালটে আগে থেকেই ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ও জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের নামের পাশে ‘ক্রস দেওয়া ব্যালট’ সরবরাহের অভিযোগ আনেন উমামা ফাতেমার প্যানেলের প্রার্থী রূপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গা। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. নাসরিন সুলতানা বলেন, ব্যালট পেপার নিয়ে বুথের ভিতরে ঢোকার পর এমন অভিযোগ করার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে আমরা সবগুলো ব্যালট পেপার চেক করেছি। কোথাও এমন সমস্যা পাইনি।’

সন্ধ্যায় মধুর ক্যানটিনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়েছি, আমাদের এতিমের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে, ঢুকতে দেওয়া হয়নি, আমাদের সময় নষ্ট করা হয়েছে। অমর একুশে হলে গিয়েছি, সেখানে কারচুপির প্রমাণ পেয়েছি। রোকেয়া হলেও কারচুপি হয়েছে।’ এটা কোনোভাবেই আশা করিনি। ছাত্রদলের পোলিং এজেন্টদেরও কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা প্রদান করা হয় বলে জানান আবিদ।

এদিকে ভোট শেষ হওয়ার পর বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে ভিসির বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন। এ সময় উপাচার্যের কাছে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শঙ্কা প্রকাশ করেন ছাত্রদল নেতারা। পরে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে কোনো অংশীজনের মতামতকে আমরা সম্মান করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক দলের দ্বারা প্রভাবিত নয়।’

এদিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয় টিএসসির সামনে থেকে। এ মিছিল থেকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ভোট চুরির অভিযোগ আনেন। তাঁরা স্লোগান দেন, ভোট চোর ভোট চোর ছাত্রশিবির ভোট চোর, ভোট চোর ভোট চোর প্রশাসন ভোট চোর। নির্বাচনে লক্ষ করা গেছে, বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাও। কার্জন হল কেন্দ্রে অমর একুশে হলের এক ভোটারকে পূর্বেই পূরণ করা ব্যালট পেপার দেওয়ার অভিযোগে জিয়াউর রহমান চৌধুরী নামে এক পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102