নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ॥
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় দেন।
দীর্ঘ শুনানির পর আজ সকাল ১০টা ৫ মিনিটে এজলাসে এসে বিচারপতিরা রায় ঘোষণা শুরু করেন, যা শেষ হয় সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে। হাইকোর্টের রায়ের কিছু অংশ সংশোধন ও পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই রায় বহাল রাখা হয়েছে।
মামলার পেছনের কথা
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে এক ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলায় ২৪ জন নিহত এবং শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
এই নৃশংস ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়—একটি হত্যা মামলা এবং অন্যটি বিস্ফোরক মামলা। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায় ঘোষণা করেন। সেই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাথে, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
উচ্চ আদালতে মামলার গতিপ্রবাহ
বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৮ সালে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে মামলার নথিপত্র হাইকোর্টে আসে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। গত বছরের ৩১ অক্টোবর হাইকোর্টে এসব আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়।
এরপর গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায়কে অবৈধ ঘোষণা করেন এবং সম্পূরক অভিযোগপত্র বাতিল করে আসামিদের আপিল মঞ্জুর করেন। এর ফলে তারেক রহমানসহ সকল দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খালাস পান।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করে। গত ২১ আগস্ট পাঁচ দিনব্যাপী শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ৪ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ধার্য করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ রায় ঘোষণা করা হলো, যেখানে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়েছে।