রাজনৈতিক ডেস্ক ॥
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রস্তাবিত নতুন আচরণবিধিমালা অনুযায়ী, আসন্ন নির্বাচনে কোনো ধরনের পোস্টার ব্যবহার করা যাবে না। তবে বিলবোর্ড ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এই সংশোধিত বিধিমালা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনে কঠোর শাস্তির বিধান
নতুন আচরণবিধিমালায় নিয়ম ভাঙার শাস্তি আরও কঠোর করা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য আর্থিক জরিমানা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে, ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান বহাল রাখা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হলো, আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে, যা আগে শুধুমাত্র আরপিও-তে ছিল।
প্রচারের নতুন দিগন্ত: বিলবোর্ড ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
সংসদীয় আসনে প্রচারের জন্য প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আয়তনের ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন। ইসির কর্মকর্তাদের মতে, পোস্টার না থাকার কারণে নির্বাচনের চিরাচরিত আমেজ কিছুটা কমতে পারে, তবে বিলবোর্ড ব্যবহারের কারণে প্রচারের খরচ বাড়তে পারে।
এছাড়াও, নতুন বিধিমালায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে পারবেন, তবে এর জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আগে থেকেই জানাতে হবে। এই প্রচারের যাবতীয় ব্যয়ও নির্বাচনি ব্যয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে কোনো ধরনের কনটেন্ট তৈরি বা প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন
ভোটর স্লিপ: ভোটার স্লিপ বিতরণের আইনি ভিত্তি দেওয়া হয়েছে। তবে স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না।
ড্রোন নিষিদ্ধ: নির্বাচনি প্রচার বা ভোটগ্রহণের সময় ড্রোন বা এ জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইশতেহার প্রকাশ: রিটার্নিং কর্মকর্তা একই মঞ্চে সব প্রার্থীর ইশতেহার প্রকাশের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
সংবর্ধনায় নিষেধাজ্ঞা: প্রার্থীরা কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন থেকে সংবর্ধনা নিতে পারবেন না।
নতুন ধারা সংযোজন: বিদ্যমান বিধিমালায় ১৯টি ধারা থাকলেও প্রস্তাবিত বিধিমালায় এর সংখ্যা ৩১-এ উন্নীত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানিয়েছেন, এই বিধিমালা চূড়ান্ত হলে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা হতে পারে এবং ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।