চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ॥
২ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে এক ব্যক্তিকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের দুই সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন গোয়েন্দা পুলিশের বন্দর জোনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন এবং কনস্টেবল মো. আজাদ। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এই দুই পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়েন্দা পুলিশের বন্দর জোনের উপ-কমিশনার আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি জানান, অভিযোগের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলবে। পাশাপাশি আদালতে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার বিবরণ
সোমবার (১১ আগস্ট) মোছাম্মৎ সাবিনা নামে এক নারী চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জুলাই সাবিনার খালাতো ভাই মো. জাকিরকে নগরীর কদমতলি মোড় থেকে তুলে নিয়ে যায় এসআই মহসিন ও কনস্টেবল আজাদ। পরে মনসুরাবাদ গোয়েন্দা কার্যালয়ে জাকিরকে আটকে রেখে তার খালাতো বোন সাবিনার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে জাকিরকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
পুলিশের দুই সদস্য সাবিনাকে জানান, জাকিরের কাছ থেকে ৩ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। ১ লাখ টাকা দিলে তাকে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ আদালতে পাঠানো হবে, আর ২ লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে। সাবিনা পরদিন টাকা দিতে পারবেন না জানালে, জাকিরের বিরুদ্ধে ৪শ’ পিস ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগ এনে নগরীর ডবলমুরিং থানায় মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশের বক্তব্য
এই অভিযোগের বিষয়ে এসআই মহসিন দাবি করেন, জাকিরকে যে পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সেগুলোর ভিত্তিতেই মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া জাকির, তার খালাতো বোন সাবিনা এবং সাবিনার স্বামী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা আছে। পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে এই মামলাটি করেছে বলে মহসিনের দাবি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পিআর) মাহমুদা বেগম বলেন, দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।