মো: নাসির খান, শরীয়তপুর প্রতিনিধি॥
শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝির ঘাট এলাকায় পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে আবারও শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদীভাঙন। গত কয়েকদিনের টানা ভাঙনের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মার প্রবল স্রোতে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকার পদ্মা সেতু কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের প্রায় ১১৫ মিটার অংশ ধসে পড়ে। মাটির নিচ থেকে হঠাৎ সরু ফাটল শুরু হয়ে তা দ্রুত বিস্তৃত হয় এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে অন্তত ৩১ টি বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
ভাঙনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রামবাসী বসতবাড়ি, দোকানপাট এবং মূল্যবান সামগ্রী সরিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেকে নিজস্ব বাহন ও ভ্যানগাড়ি দিয়ে জিনিসপত্র সরাচ্ছেন। নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে অনুরোধ করছেন।
এদিকে ভাঙন আতঙ্কে বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। ভাঙন ঠেকাতে জিওব্যাগ ও জিওটিউব ডাম্পিং অব্যাহত রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একদিনের ভাঙনে জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মঙ্গল মাঝিরঘাট এলাকার আমির হোসেন মাদবর, তাজুল মাদবর, আয়নাল খান,ইমরান মাদবর মাদবরের বসতঘর নদীগর্ভে চলে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে জাজিরা মঙ্গল মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বাঁধটি তৈরি করতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। কয়েক দফায় ভাঙনে এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের ২ কিলোমিটার অংশের প্রায় ৭৫০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তবে ভাঙন ঠেকাতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। তবে স্রোত বাড়ায় নদীভাঙন ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ তারেক হাসান বলেন, ‘ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ও জিওটিউব ডাম্পিং শুরু করেছি। স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকাতে আগামী বর্ষার আগেই বাঁধের কাজ শুরু হবে।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মিস তাহসিনা বেগম বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। নদী ভাঙ্গনে যে পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের তালিকা প্রস্তুত করে সহযোগিতা করা হবে।