অনলাইন ডেস্ক ॥
ঢাকা: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে দলটি। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, প্রায় ১০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রায় চূড়ান্ত হলেও বাকি ২০০ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা ১৫০০ ছাড়িয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ জরিপেই এমন চিত্র উঠে এসেছে।
ত্যাগী ও তরুণ নেতাদের প্রাধান্য
দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, এবার প্রার্থী বাছাইয়ে ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজ সম্পন্ন নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিশেষ করে, ১০০টি আসনে তরুণ ও নতুন মুখদের প্রাধান্য দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি আসনে সাধারণত তিন জন করে সম্ভাব্য প্রার্থীর একটি তালিকা তৈরি করে বিএনপি। বর্তমানে সেই তালিকা যাচাই-বাছাই ও সংযোজন-বিয়োজনের কাজ চলছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এই তালিকা থেকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের বেছে নিয়ে ৩০০ আসনের জন্য চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে। জোটভুক্ত সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা না হলে সব আসনেই এককভাবে লড়বে বিএনপি।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, দল নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং গণসংযোগ করছেন। তিনি বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি, তাই এবার ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপি এবার সর্বজন গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাদের প্রার্থী করবে।
জানা গেছে, সম্প্রতি লন্ডনে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য হয়। এর পর থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা আরও জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি তারা হাইকমান্ডের সমর্থন পেতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
শর্তসাপেক্ষ মনোনয়ন
বিএনপির হাইকমান্ড প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো:
গত ১৫ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে যারা সক্রিয় ছিলেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
প্রার্থীকে অবশ্যই সুশিক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের অধিকারী হতে হবে।
সন্ত্রাস, দুর্নীতি বা চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে এমন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
সরাসরি মাঠের খবরের পাশাপাশি লন্ডন থেকে তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং অনেকের সঙ্গে সরাসরি কথাও বলছেন। যারা ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন, তাদের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। অনেককে নির্দিষ্ট আসনে কাজ করার জন্য সরাসরি নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে, যা প্রার্থীরা হাইকমান্ডের ‘গ্রিন সিগনাল’ হিসেবে ধরে নিচ্ছেন।
নারীদের জন্যও সুযোগ
কেবল পুরুষদের জন্য নয়, সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় এবং জনপ্রিয়তা আছে এমন নারী নেত্রীদের এবার সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে, বিএনপি এবার সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে চাইছে।
আন্দোলনের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বিএনপি তাদের শরিকদের যথাযথ মূল্যায়ন করবে বলে আশা করছেন এবং সম্মানজনক আসন ছাড় দেবেন।