আদালত প্রতিবেদক॥
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে এই তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত ‘বিএনপি নেতা বনে গিয়ে পল্লবীতে চাঁদাবাজি শুরু করেছে যুবলীগ নেতা জাকির’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন আদালতের নজরে আসে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযুক্ত জাকির ওরফে ‘শুটার জাকির’-এর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে, পল্লবী থানা এলাকায় চাঁদাবাজির মাধ্যমে যারা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে, সুনির্দিষ্টভাবে তাদের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, প্রচারিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, জাকির হোসেন ওরফে শুটার জাকির নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে তার দলবল নিয়ে পল্লবীর টেকেরবাড়ি ও সাগুফতা এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদার জন্য ভাঙচুর ও ব্যবসায়ীদের মারধর করছে। প্রতিবেদনে তাসকিন নামের এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন যে, শুটার জাকির তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পা কেটে ফেলার চেষ্টা করে। তাসকিন বলেন, “আমি প্রায় ১৮-২০ দিন ধরে বিছানায় শুয়ে আছি। আমাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে।”
আদালত মনে করেন, পল্লবীর টেকেরবাড়ি ও সাগুফতা এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে তাদের স্বাভাবিক ব্যবসা পরিচালনা করতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন, যা মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং একটি আমলযোগ্য অপরাধ। ভুক্তভোগীরা জীবনের ভয়ে থানায় অভিযোগ বা মামলা করার সাহস পাচ্ছেন না।
আদালতের আদেশে আরও বলা হয়, শুটার জাকির ও তার দলের কর্মকাণ্ড দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা যেমন ১৪৩, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩৮৫, ৩৮৬, এবং ৩৮৭ ধারার অধীনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। এই ঘটনা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১) সি ধারা অনুযায়ী আদালতের নজরে এসেছে। তাই, আদালত পল্লবী থানার ওসিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে শুটার জাকির ও তার দলের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন এবং একই সঙ্গে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা দিতে বলেছেন। একইসাথে, প্রচারিত প্রতিবেদনে উল্লেখিত ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।