ঢাকা, ২৯ জুলাই ২০২৫ (বাসস) ॥
হংকং-ভিত্তিক টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান হানডা বাংলাদেশে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যা প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে হানডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হান চুন এই বৃহৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনার কথা জানান।
প্রাথমিকভাবে হানডা বাংলাদেশের বস্ত্রখাতে ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছিল। গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়। তবে, বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জোরালো সহযোগিতার কারণে হানডা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ২৫০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে।
কোম্পানিটি এখন বাংলাদেশে তিনটি কারখানা স্থাপন করবে—এর মধ্যে দুটি গার্মেন্টস প্রসেসিং এবং একটি নিটিং ও ডায়িং ইউনিট। হান চুন জানান, বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ), বেজা (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) এবং বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ)-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর তারা বিনিয়োগ বাড়ানোর আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, হানডা তাদের প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চায়।
বিডা, বেজা ও বেপজা কর্মকর্তারা এই বিনিয়োগকে বাংলাদেশের বস্ত্রখাতে অন্যতম বৃহৎ একক চীনা বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস হানডা ইন্ডাস্ট্রিজের বিনিয়োগ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি হানডাকে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের নেতৃত্ব দিতে এবং অন্যান্য চীনা বিনিয়োগকারীদেরও এখানে আসার জন্য উৎসাহিত করতে আহ্বান জানান। একই সাথে, তিনি বাংলাদেশি ডিজাইনারদের প্রশিক্ষণ প্রদানের ওপর জোর দেন যাতে তারা ক্রেতাদের পছন্দ-রুচি বুঝে কাজ করতে পারেন।
হান চুন প্রধান উপদেষ্টার কাছে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিতব্য কারখানার একটি নকশা উপস্থাপন করেন, যা দেখে প্রধান উপদেষ্টা মুগ্ধ হয়ে এটিকে “একটি চমৎকার চিত্রকলা” হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রথম ধাপে ৮০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে মিরসরাইয়ে গার্মেন্টস কারখানার জমি ইজারার চুক্তি বুধবার স্বাক্ষরিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের জমি ও অন্যান্য সুবিধাদি চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, যা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাক্ষাৎকালে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান এবং হানডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট হেং জেলি।