অনলাইন ডেস্ক ॥
ঢাকা, ২২ জুলাই: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে, যাদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। এই মর্মান্তিক ঘটনায় জাতি গভীর শোক ও বেদনায় আচ্ছন্ন। মঙ্গলবার সকালে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান জানান, নিহতদের মধ্যে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক। এদের মধ্যে একজন হলেন বিমানটির পাইলট তৌকির ইসলাম এবং অন্যজন শিক্ষক মাহরীন চৌধুরী। এছাড়া, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বর্তমানে ৭৮ জন আহত ব্যক্তি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪২ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২৮ জন, এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জন রোগী ভর্তি আছেন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মোট ১৫টি মরদেহ ছিল, যার মধ্যে পাইলট তৌকিরের মরদেহ সেখানেই রাখা হয়েছে। এছাড়া, ইউনাইটেড হাসপাতালে একজনের মরদেহ আনা হয়েছে।
ডা. সায়েদুর রহমান উল্লেখ করেন, ৬টি মরদেহের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি এবং তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজনের মধ্যে দুইজন আইসিইউতে রয়েছেন। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের মধ্যে পাঁচজন আইসিইউতে এবং তাদের মধ্যে দুইজন ভেন্টিলেশনে আছেন, যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান জানান, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত আছে। এই চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরের কাছে কারিগরি সহায়তার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং রোগীদের কেস সামারি তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সেই হাসপাতালে উপস্থিত আছেন এবং সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, রক্তদাতাদের প্রতি অধ্যাপক সায়েদুর রহমান অনুরোধ জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভিড় না করার জন্য। তিনি বলেন, “বর্তমানে ১০০ জনেরও কম রক্তদাতার প্রয়োজন। তাই নেগেটিভ গ্রুপের রক্তদাতা ছাড়া অন্য কাউকে ভিড় না করার অনুরোধ করছি। এতে আমাদের ব্যবস্থাপনাগত অসুবিধা হয়।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ১০ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে ৮ জন, ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে ১ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি স্বজনদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের নামের তালিকা পাবলিক ডোমেইনে দেওয়া আছে, তারা যেন সেখান থেকে তথ্য জেনে নেন।