গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করেছে এবং বুধবার রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করেছে।
নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেড়ারবাজার এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮), টুঙ্গিপাড়ার ইদ্রিস মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা (৩৫), থানার পাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২২), এবং শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫)। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শেখ মো. নাবিল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হামলার সূত্রপাত ও সহিংসতা বৃদ্ধি
এনসিপির সমাবেশ শেষে ফেরার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহরে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে গোপালগঞ্জ শহরজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বুধবার বিকালে জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। এই সময় অনেক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জ থেকে অন্যান্য জেলায় যাওয়ার মূল সড়কগুলো গাছের গুঁড়ি ফেলে বন্ধ করে দেয়।
এর আগে সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) গাড়িবহরেও হামলা চালানো হয়।
এনসিপির লং মার্চ ও সমাবেশ
জুলাই মাসজুড়ে কেন্দ্রীয় এনসিপি সারাদেশে জেলায় জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচী পালন করছে। এরই অংশ হিসেবে আজ তারা গোপালগঞ্জে লং মার্চ ও সমাবেশ করে। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করেই দু’পক্ষের মধ্যে এই ভয়াবহ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।