বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০১ পূর্বাহ্ন
১০ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৫ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম :
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ফিরছেন আহমেদ শরীফ, লড়তে চান সভাপতি পদে ধামরাইয়ে বিএনপির কাণ্ডারি তমিজ উদ্দিন: ঢাকা-২০ আসনে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত জলবায়ু অভিযোজনে বিনিয়োগ করলে ২০৩০ সালে পোশাক রপ্তানি ছাড়াবে ১২ হাজার কোটি ডলার তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: আজ ঢাবি ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল নির্বাচনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ বাড়াতে জাতিসংঘের নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ফিউচার বাংলাদেশ’ ধামরাইয়ে বাজারে লুটপাটের অভিযোগ নিয়ে ধূম্রজাল: ব্যবসায়ীদের দাবি ‘ঘটনা সাজানো’ কেরানীগঞ্জে ফরমালিন দিয়ে ফল পাকানোর দায়ে ৯ ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড সালথায় ৪০ পেঁয়াজ চাষিকে প্রকাশ্যে ঋণ দিল কৃষি ব্যাংক ওসমান হাদীর খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আইএইচআরসি’র প্রতিবাদী সমাবেশ ধামরাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে নবনিযুক্ত ওসির মতবিনিময় সভা

আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল ক্যাম্পাস

Coder Boss
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫
  • ৭২ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
আজ ১ জুলাই। ঠিক এক বছর আগে এই দিনেই শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে সেদিন ফুঁসে উঠেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছিল প্রতিটি ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের দেওয়া তিন দিনের আলটিমেটামই রূপ নেয় ৩৬ দিনের এক নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে।

২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল, হাইকোর্ট সেটিকে বাতিল করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন ২০২৪ সালের ৫ জুন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধেই সেদিন সূচনা হয়েছিল সর্বাত্মক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের।

আন্দোলনের সূচনালগ্ন ও দাবিদাওয়া
আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। কলাভবন, শ্যাডো, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ এবং বিভিন্ন হল ঘুরে ভিসিচত্বর হয়ে মিছিলটি শেষ হয় রাজু ভাস্কর্যে। সেখান থেকে তারা উত্থাপন করেন চার দফা দাবি:

১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।

২. ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালসাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া।

৩. সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা।

৪. দাবি আদায় না হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।

পরের দিনই ঘোষণা করা হয় ‘গণপদযাত্রা’ কর্মসূচি। ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ডাক দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ছাত্রসমাবেশে বলেন, “৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে কোটাব্যবস্থার চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয়।” তিনি পরের তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন, যার মধ্যে ২ জুলাই ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে গণপদযাত্রা শুরুর আহ্বান জানানো হয়। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও নিজ নিজ ক্যাম্পাসে একই কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সেদিন উত্তাল ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনের ডাক দেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। তারা বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। তাহলে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীনের পর আমাদের সঙ্গে কেন বৈষম্য করা হচ্ছে? আমরা ৫৬ শতাংশ কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। সরকারি চাকরিতে কোটা কখনোই কাম্য নয়। চাকরি কোটায় নয়, মেধায় হোক।”

কোটা পুনর্বহাল বিরোধী আন্দোলনের প্রথম দিনটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল সরব। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল জাবির প্রধান ফটকে পৌঁছায় এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় লেন ১০ মিনিটের জন্য প্রতীকী অবরোধ করে। সমন্বয়ক আরিফ সোহেল হুঁশিয়ারি দেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল করা না হলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে ‘ঢাকা অচল’ করে দেওয়া হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাদের মিছিল ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় ঘুরে রফিক ভবনের সামনে শেষ হয়। শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও রাজপথে জোরালো আন্দোলনের মাধ্যমে কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে গড়ে ওঠা বিপ্লবীদের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’ আজ দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক কর্মসূচি শুরু করবে। দলের নেতারা আজ সকাল ৮টায় রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা করবেন। এরপর দুপুরে গাইবান্ধা এবং বিকালে রংপুর সদরে পথসভায় অংশ নেবেন।

এছাড়াও, বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি সব রাজনৈতিক দল এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের অংশগ্রহণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102