সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: মজিবুর রহমান॥
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে এক প্রবাসীর স্ত্রীর বাগানের গাছ ও ফসলি জমির পাট কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। দুটি ভিন্ন সময়ে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৪ জুন বাগানের গাছ কেটে ফেলা হয় এবং এরপর ২৮ জুন ৭৯ শতাংশ জমির পাট কেটে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় সালথা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, তবে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থেকেও বাদী পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
কী ঘটেছিল?
ভুক্তভোগী শেফালী বেগম জানান, তার স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে। সরেজমিনে জানা যায়, নারানদিয়া ৮৮ নং মৌজার ৩৫৬ নং দাগের ৪২ শতাংশ জমির ওপর থাকা প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এই ঘটনার পর কোনো বাধা না পেয়ে একই মৌজার ৫৪৯ ও ৫৫০ দাগের ৬৯ শতাংশ জমির পাটও প্রকাশ্যে দিনের বেলায় কেটে ফেলা হয়।
শেফালী বেগম অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী ও আত্মীয় মো. ওমর আলী সরদার বহিরাগত কিছু লোকজনের সহায়তায় এই হামলা চালিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি মহিলা মানুষ, ভয়ে এগিয়ে যাইনি। গেলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল।”
অভিযুক্তরা কারা?
শেফালী বেগমের অভিযোগ অনুযায়ী, ওমর আলী সরদারের সহযোগীরা হলো: লক্ষ্মণদিয়া গ্রামের ফেলু মাতুব্বরের ছেলে বিলায়েত মাতুব্বর, চরকামদিয়া গ্রামের সুলতান সরদারের ছেলে রোকমান সরদার, নারানদিয়া গ্রামের সেকেন সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার, একই গ্রামের সোবহান সরদারের ছেলে রিপন ও মহল্লাল সরদার, এবং চান্দাখোলা গ্রামের সুনতেলের স্ত্রী রেশমা বেগমসহ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল। এই বাহিনী একত্রিত হয়ে তাদের জমিতে তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় বলে জানান শেফালী।
মামলা ও পুলিশের তৎপরতা
শেফালী বেগম এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উপরন্তু, বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিপক্ষের বক্তব্য
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওমর আলী সরদার বলেন, “আমি কারো জমি দখল করিনি, বরং ওরা আমার জমি দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছে। এসব জমির দলিল আমার কাছে আছে। আমার জমিতে আমি গেছি।”
পুলিশের বক্তব্য
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং তারা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।