গাজীপুর প্রতিনিধি॥
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মোহাম্মদ রাশেদকে বদলি করা হয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র নয় মাসের মাথায় তাকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগে বদলি করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) জিএমপি কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়েছে। একই দিনে ডিবি (উত্তর)-এর পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলামকে গাছা থানার ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
জানা যায়, ওসি আলী মোহাম্মদ রাশেদ গাছা থানায় যোগদানের আগে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে তিনি গাছা থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করার কিছুদিন পর থেকেই মামলা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে গাজীপুরে আলোচিত ও সমালোচিত হন।
স্থানীয় বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গাছা থানায় দায়িত্ব পালনকালে ওসি আলী মোহাম্মদ রাশেদের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার একাধিক আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্য, মাটি বিক্রি চক্র ও জলমহাল দখলে সহায়তা, মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন এবং ঝুট নিয়ন্ত্রণসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সূত্র জানিয়েছে, ওসি রাশেদ যুবলীগ নেতা আল-আমিনের মাধ্যমে ‘মামলা বাণিজ্য’ চালাতেন। এই মামলা বাণিজ্য করতে গিয়ে এমনকি গাজীপুরের বাইরে অবস্থানরত ব্যক্তি, দুই বছরের বেশি সময় ধরে প্রবাসে থাকা প্রবাসী এবং নিরীহ ব্যক্তিদেরও ছাত্র আন্দোলনের মামলায় আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, যুবলীগ নেতা থেকে কথিত ‘ছাত্র সমন্বয়ক’ পরিচয়ধারী আল-আমিনের মাধ্যমে গাছা থানায় একটি ‘মামলা বাণিজ্য চক্র’ গড়ে ওঠে, যার নেপথ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ছিল ওসি রাশেদের।
আল-আমিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনাবাড়ী মেট্রো থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় (তারিখ: ৩ মে ২০২৫, মামলা নম্বর: ৩, আসামি নম্বর: ৩৮) নিজে আসামি হয়েও ওসি রাশেদের মদদে বিভিন্ন মামলায় সাধারণ মানুষকে আসামি করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এমনকি আল-আমিনের স্ত্রীসহ তার পরিবারের ঘনিষ্ঠদেরও ছাত্র আন্দোলনের মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশের বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এসব অভিযোগ উঠে এসেছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়গুলো নিয়ে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন ও একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।