অনলাইন ডেস্ক ॥
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেছেন, নিছক কোনো নির্বাচন আয়োজনের জন্য দেশের মানুষ সরকারকে ক্ষমতায় বসায়নি। গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন, তাদের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রথমে বিচার সম্পন্ন করা, একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের পর একটি সামাজিক চুক্তির আভাস তৈরি হয়েছিল, কিন্তু সেটিকে সঠিক পথে না নিয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়। সেই একই ভুল আর হতে দেওয়া যাবে না। তবে, দেশের মাটি এবং শহীদদের রক্তের প্রতি অসম্মান দেখিয়ে বিদেশে বসে রাজনৈতিক বৈঠক হচ্ছে, যেখানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার কোনো প্রতিফলন নেই।
নাসির উদ্দিন অভিযোগ করেন, সরকারের উচিত ছিল দেশের মাটিতে বসে জনগণের সঙ্গে কথা বলা এবং শহীদ ও আহতদের পরিবারের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করা। তিনি দাবি করেন, সরকার ও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল লন্ডনে বসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, সরকার কেবল একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করছে, জনগণের সঙ্গে নয়। এর ফলে দেশে একটি গভীর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হচ্ছে। সরকার যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন না ঘটায়, তবে নতুন একটি গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে উঠবে।
নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী জানান, ‘জুলাই ঘোষণা’র দাবিতে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত সরকার এসব বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে শুধুমাত্র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে জনগণ নতুন করে আন্দোলনে নামবে এবং এনসিপি জনগণের পাশে থাকবে।”
তিনি বিএনপিকেও সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিল, এখন রোজার আগেও নির্বাচন হতে পারে বলছে। কিন্তু তারা শহীদদের বিচার ও সংস্কার নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছে না। এটিকে তিনি জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলে উল্লেখ করেন।
নাসির উদ্দিন পাটওয়ারীর মতে, একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য বিচার, সংস্কার এবং একটি নতুন সংবিধান অপরিহার্য। এই তিনটি শর্ত পূরণ না হলে, নির্বাচন হবে শুধুমাত্র একটি দলের নির্বাচন, জনগণের নয়। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক পথে উত্তরণের ওপর নির্ভর করছে, আর তা সম্ভব হবে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক চুক্তির মধ্য দিয়ে।