শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০২:৫৪ অপরাহ্ন
৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম :
আশুলিয়ায় ঢাকা লিগ্যাসি লিমিটেডের প্রকল্পে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ: মামলা দায়ের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষিত নির্বাচন সময়সীমা নিয়ে জামায়াতের আপত্তি নেই: আজহারুল ইসলাম জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হলে গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য: নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী রমজানের আগেই নির্বাচন: তারেক রহমানের প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেন প্রধান উপদেষ্টা শিশুর স্বপ্ন বুনতে মাদ্রাসায় নারিকেল চারা রোপণ: এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ খুলনাতে চেক ডিজঅনার মামলা: ন্যায়বিচার পেতে যে নথিগুলো জরুরি পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে ব্রিটিশ সরকারের ‘নৈতিকভাবে’ সহযোগিতা চান ড. ইউনূস করোনা মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ? নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বেগ অবশেষে সাগরে ফিরলেন জেলেরা: খুলল অর্থনীতির দুয়ার সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পদ জব্দ করলো এনসিএ

আশুলিয়ায় ঢাকা লিগ্যাসি লিমিটেডের প্রকল্পে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ: মামলা দায়ের

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫
  • ১০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
আশুলিয়া, ১ জুন ২০২৫: আশুলিয়ার জামগড়া চৌরাস্তা এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঢাকা লিগ্যাসি লিমিটেডের প্রকল্পে জোরপূর্বক প্রবেশ করে সীমানা বাউন্ডারি ওয়াল ভাঙচুর, মারধর, চাঁদা দাবি ও চুরির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির লিগ্যাল অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার মো. রুবেল মুন্সী আশুলিয়া থানায় একটি মামলা (নিয়ন্ত্রণ নং ২৪৩) দায়ের করেছেন। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে ও ৩০ মে, ২০২৫ তারিখে এই ঘটনাগুলো ঘটে।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৬ মে ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২:৫০ ঘটিকায় এবং ৩০ মে ২০২৫ তারিখ সকাল অনুমান ১০:০০ ঘটিকায় আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া চৌরাস্তা, ফ্রেন্ডস টাওয়ারের ২য় তলায় অবস্থিত ঢাকা লিগ্যাসি লিমিটেডের অফিস কক্ষ এবং নরসিংহপুর বুড়িপাড়া সাকিনস্থ লিগ্যাসি লালপাহাড় সিটি হাউজিংয়ের অভ্যন্তরে হামলা চালানো হয় এবং জায়গা ও সীমানা বাউন্ডারি ওয়াল ভাঙচুর করা হয়।

অভিযোগপত্রে পাপ্পু মোল্লা (২৮), সফু মোল্লা (সাবেক মেম্বার ৬০), সফু মেম্বারের ভাতিজা বাবু মোল্লা (৩০) এবং আমিরুল মোল্লা (৩০) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জন ব্যক্তিকে এই হামলায় জড়িত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এদের সবার বাড়ি বুড়িপাড়া নিশ্চিন্তপুর, আশুলিয়া, ঢাকা। এজাহারে আরও বলা হয়েছে যে, সফু মোল্লা এলাকায় ‘মাদক সম্রাট সফু’ নামে পরিচিত এবং তার বিরুদ্ধে রিকশা চুরি, ছিনতাই, মোবাইল ফোন ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযুক্তরা বেআইনিভাবে জনতাবদ্ধ হয়ে ঢাকা লিগ্যাসি লিমিটেডের গেইট ভেঙে জোরপূর্বক প্রজেক্টে প্রবেশ করে কেয়ারটেকার দুলালকে মারধর করে জখম করে। একপর্যায়ে আহত অবস্থায় দুলালকে টেনে হিঁচড়ে প্রজেক্ট এর বাইরে নিয়ে যায় এবং প্রজেক্টে ঢোকার রাস্তায় ও গেইটে বাঁশ দিয়ে বেরিকেট সৃষ্টি করে যেন কেউ প্রজেক্টে ঢুকতে না পারে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মো. মোস্তফা, মো. বেলায়েত হোসেন বেলাল ও মো. আতাউর রহমান সরকার জানান, এ ঘটনা ঠেকাতে গেলে এদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও মারামারি হয় এবং তাদেরও জনসম্মুখে উচ্চস্বরে চিৎকার করে চাঁদা দাবি করা হয়। এ সময় নগদ ৩,৫০০ টাকা চুরি করেন অভিযুক্তরা। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকার সম্পত্তির ক্ষতিসাধন ও হুমকি প্রদানের অভিযোগও আনা হয়েছে।

মামলার অগ্রগতি ও সংশ্লিষ্ট আইনানুগ ধারা
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন এবং অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইন স্বাক্ষরিত প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. জাহাঙ্গীর আলমকে। এজাহারে মামলা দায়েরের বিলম্বের কারণও উল্লেখ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মো. রুবেল মুন্সী, যিনি বানারীপাড়া, বরিশাল জেলার বাসিন্দা হলেও বর্তমানে আশুলিয়ার জামগড়া চৌরাস্তায় বসবাস করছেন, তিনি ঢাকা লিগ্যাসি লিমিটেডের লিগ্যাল অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত পুরোদমে চলছে এবং এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রযোজ্য আইনি ধারাগুলো
এই ঘটনায় বাংলাদেশের দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩৮৫, ৩৭৯, ৪২৭ এবং ৫০৬ এই ধারাগুলো নিহিত হয়েছে। এই ধারাগুলোতে বেআইনি সমাবেশ, অনধিকার প্রবেশ, মারপিট, বলপূর্বক আদায়, চুরি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির মত অপরাধগুলোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

নিচে মামলায় সংশ্লিষ্ট ধারাগুলোর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
১৪৩ ধারা (বেআইনি সমাবেশ): যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি সমাবেশে যোগদান করে বা তাতে অংশ নেয়, তবে তার শাস্তি এই ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। বেআইনি সমাবেশ বলতে বোঝায়, এমন একটি জনসমাগম যা কোনো সাধারণ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য একত্রিত হয় এবং যার মাধ্যমে শান্তিভঙ্গ বা জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৪৪৭ ধারা (অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ): কোনো ব্যক্তি যদি কারো সম্পত্তিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে বা সেখানে অবস্থান করে, তবে তাকে এই ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।

৪৪৮ ধারা (গৃহ বা সম্পত্তি বিনষ্ট করা): যদি কোনো ব্যক্তি কোনো বাড়িতে বা সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ করে এবং সেখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি করে, তবে এই ধারায় তার বিচার হবে।

৩২৩ ধারা (মারপিট করা): যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যকে মারধর করে, তবে এই ধারায় তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।

৩৮৫ ধারা (বলপূর্বক আদায়): যদি কোনো ব্যক্তি অন্যকে ভয় দেখিয়ে তার থেকে কিছু আদায় করার চেষ্টা করে, তবে এই ধারায় তাকে চাঁদাবাজি হিসাবে অভিযুক্ত করা হবে।

৩৭৯ ধারা (চুরি): যদি কোনো ব্যক্তি অন্যের জিনিস চুরি করে, তবে এই ধারায় তার বিচার হবে।

৪২৭ ধারা (সম্পত্তির ক্ষতিসাধন): যদি কোনো ব্যক্তি কোনো সম্পত্তির ক্ষতি করে বা তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়, তবে এই ধারায় তার বিচার হবে।

৫০৬ ধারা (ভয় দেখানো): যদি কোনো ব্যক্তি অন্যকে ভয় দেখায়, তবে এই ধারায় তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102