অনলাইন ডেস্ক ॥
১২ জুন ২০২৫: বাংলাদেশে যখন ধীরে ধীরে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছিল, তখনই নতুন করে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি উদ্বেগ তৈরি করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আবারও খারাপের দিকে যেতে পারে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দীর্ঘ একটি অনিশ্চিত ও কঠিন সময় পার করেছে বাংলাদেশ। তবে ২০২৩ সাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সে বছর করোনায় ৩৭ জনের মৃত্যু হলেও ২০২৪ সালে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। মানুষও তখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছিল।
নতুন ধরনের আগমন ও সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি
তবে সম্প্রতি করোনার নতুন একটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার হার আবারও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিলে যেখানে ২৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে মে মাসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ জনে। আর চলতি জুন মাসের প্রথম ১১ দিনেই ৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিসংখ্যান আবারও প্রমাণ করে যে ভাইরাসটি এখনো সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও সরকারের প্রস্তুতি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়লেও এটি এখনো মহামারির রূপ নেয়নি। তবে তারা দ্রুত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, কোভিডের নতুন উপধরণ দেখা যায় এবং এর ফলে সংক্রমণ বাড়ে। যদিও করোনার কোনো সুস্পষ্ট মৌসুমি বৈশিষ্ট্য এখনো প্রমাণিত নয়, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যতটা সম্ভব সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে ভাইরাসের নতুন রূপান্তরের সম্ভাবনাও কমে যাবে।
এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা সরকারের প্রতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে:
মানুষকে সঠিক তথ্য জানানো।এই বিষয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের গণমাধ্যমে সরাসরি কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া।করোনা পরীক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা।নিয়মিত টিকা কার্যক্রম চালু রাখা।
এদিকে, বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, টিকা কার্যক্রম এখনো চালু আছে এবং করোনা পরীক্ষার কিটের কোনো সংকট নেই। তিনি স্বীকার করেন যে কিছু স্থানে কিছু কিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তবে কিট সংগ্রহ করা হয়েছে এবং যেসব স্থানে আরটিপিসিআর পরীক্ষা হয়, সেখানে কিট মজুদ আছে। কিট সরবরাহে যেন কোনো ঘাটতি না থাকে, সে জন্য বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
জনসচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
এছাড়া, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনসমাগম এড়িয়ে চলা, মাস্ক পরিধানসহ ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। সরকার ও বিশেষজ্ঞ মহল আশা করছে, সতর্কতা ও নিয়ম মেনে চললে করোনার এই নতুন ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার এবং জনগন কতটা প্রস্তুত বলে আপনি মনে করেন?