অনলাইন ডেস্ক ॥
৫৮ দিনের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ফিরেছেন উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা। গতকাল বুধবার (১১ জুন) দিবাগত মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন ও সংরক্ষণের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ভোলাসহ উপকূলীয় জেলাগুলোর জেলেপল্লিগুলোতে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।
প্রতি বছরই ইলিশের প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য সরকার একটি নির্দিষ্ট সময় সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এবার ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যা পূর্বে ৬৫ দিন ছিল। এই সময়ে জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকায় সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের প্রজনন ও বৃদ্ধি সহজ হয়।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, ভোলা জেলায় প্রায় ৬৫ হাজার সমুদ্রগামী জেলে রয়েছেন, যারা নিষেধাজ্ঞা চলাকালে মাছ ধরা থেকে সম্পূর্ণ বিরত ছিলেন। এ সময়ে জেলেদের জীবনযাত্রার কথা মাথায় রেখে সরকার মানবিক সহায়তা হিসেবে মাথাপিছু ৭৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে এবং সমুদ্রে অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স নিয়মিত টহল পরিচালনা করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ায় গতকাল সকাল থেকেই জেলেপল্লিগুলোতে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। জেলেরা তাদের জাল, খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গুছিয়ে দলবদ্ধভাবে সমুদ্রে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছেন। দীর্ঘদিনের কর্মহীনতা শেষে আবারও সাগরে ফিরতে পেরে তাদের চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বাস আর নতুন স্বপ্ন। আশা করা হচ্ছে, এই নিষেধাজ্ঞা মৎস্য সম্পদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং জেলেরা সমৃদ্ধ একটি মাছ ধরার মৌসুম উপভোগ করতে পারবেন।