প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥
২৯ মে ২০২৫ বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুরুল হোসেন চৌধুরী হলে কৃষি ও ভূমি সংস্কার বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের বানিজ্য ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও পিপিআরসি-র নির্বাহী চেয়ারম্যান, সম্মানীয় অতিথি, ড.এম এ সোবহান, ওবিনিগের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট উদ্ভিদ বিজ্ঞানী, জাহাঙ্গীর হোসেন জনি, উবিনিগের ডাইরেক্টর, বিকাশ বিশ্বাস, ম্যানেজার, কারিতাস বাংলাদেশ, ডা: শাসুন্নাহার খান ডলি, সভাপতি, বাংলাদেশ কিষাণী সভা, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, কৃষক নেতা আলম বাচ্চু, ফজলু মুন্সী, হাসিনুর, মোঃ গাফ্ফার প্রমূখ। সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট গবেষক আহমেদ বোরহান। প্রবন্ধ পাঠের পর মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত সদস্যরা অংশগ্রহণ করে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, কৃষি দেশের অর্থনীতির বড় শরীক অথচ দেশের বৃহত্তর খাত কৃষি নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা স্পষ্ট নয়। আগষ্ট অভ্যূথানের প্রেক্ষাপটে কৃষি সংস্কার কমিশন গঠন করলে তা যুক্তিযুক্ত হত। ভূমি ও কৃষি সংস্কার এখন সময়ের দাবী–ফরজ কাজ। তিনি দরিদ্র মানুষের দাবী আদায়ের লড়াইয়েকে শক্তিশালী করা একটি পবিত্র কাজ মনে করেন। ক্ষুদ্র কৃষক ও ভূমিহীনের অনিষ্টকারী কায়েমি স্বার্থবাদী মহলের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি দেশের কৃষকের উন্নয়ন করাকে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিতার সামিল মনে করে।
ড:. এম এ সোবাহান তাঁর বক্তব্যে বলেন, কৃষি সংস্কার অত্যন্ত জরুরী। আমাদের রাসায়নিক সার ও কিটনাশক নির্ভর চাষাবাদ হতে বেড়িয়ে আসতে হবে। প্রাকৃতিক, পরিবেশ ও প্রতিবেশ নির্ভর চাষাবাদ ব্যাপকভাবে চালু করতে হবে।
ওবিনিগের পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন জনি বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে বহুজাতিক কোম্পানির দাপট বন্ধ করতে হবে।
কারিতাস বাংলাদেশের ম্যানেজার বিকাশ বিশ্বাস বলেন, ধরিত্রী বাঁচাতে আশাকে জাগ্রত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কৃষকের ভূমিকা কেন্দ্রীয়।
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য তথা ক্ষুধা ও দারিদ্য নিরসনে একটি সমন্বিত কৃষি ও ভূমি সংস্কার আজকের বাস্তবতায় জরুরী কর্তব্য বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় বন্টণমূলক কৃষি ও ভূমিসংস্কারের উপর জোর প্রদান করেন। কৃষি ও ভূমি সংস্কার প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে কৃষক, আ্যগ্রোইকোলজী ও খাদ্যসার্বভৌত্বের ধারনার স্থান থাকতে হবে। তিনি বলেন সংস্কারের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাবকে বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে।
সম্মেলনে নিম্নোক্ত সুপারিশ সমূহ উপস্থাপন করা হয়-
১. প্রকৃত ভূমিহীনের মাঝে খাসজমি বিতরণ করা। ২. সমন্বিত ভূমি ও কৃষি সংস্কার করা। ৩. দেশের সমস্ত খাসজমি চিহ্নিত করা।৪. খাসজমির অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা।৫. খাসজমির অবৈধ দখলদারদের বিচারের আওতায় আনা। ৬. খাদ্য সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা। ৭. জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পূণর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দেয়া। ৮. সবুজ জলবায়ু তহবীল প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের স্বার্থে ব্যায় করা। ৯. কৃষি জমিকে অকৃষি জমিতে রূপান্তর বন্ধ করা। ১০. অনুপস্থিত ভূমি মালিকানা বাতিল করা। ১১. ভেস্টেট প্রপার্টি আইন বাতিল করে প্রকৃত মালিকের হাতে ভূমি হস্তান্তর করা। ১২. পতিত সম্পত্তির নামে হিন্দুর সম্পত্তি দখল বন্ধ করা।