শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন
২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ফরিদপুরের মধুখালীতে সাংবাদিক পরিবারের উপর হামলা-লুটপাট ও ধর্ষণের চেষ্টা

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৯৪ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক॥
মধুখালীতে লিজা নামের এক গৃহবধু কে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী লিজার সঙ্গে কথা বলে জানাযায় যে, তিনি একুশের কন্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক পেশায় নিয়োজিত। লিজা বলেন, ঘটনার দিন (১৩ অক্টোবর) বিকাল আনুমানিক ৫ ঘটিকার সময় আমার ভাড়া বাসায় আমার স্বামীর সাবেক স্ত্রী রোজিনা বেগম থানার থেকে পুলিশ নিয়ে আমার স্বামীকে খুঁজতে বাসায় আসেন। তখন আমার স্বামী বাসায় ছিলেন না।

সে সময় আমার স্বামীর সাবেক স্ত্রীর সাড়ে সাত বছরের কন্যা মাইশা আমার বাসাতেই থাকে তাকে পুলিশের সহযোগিতায় আমার কাছ থেকে নিয়ে যায় এবং আমার স্বামীকে খোঁজে না পেয়ে তখন আমার বাসা থেকে পুলিশ সহ রোজিনা বেগম চলে যায়।পরে আমি স্বামীকে ফোন করে বাসায় পুলিশ আসার ঘটনা বলি, আপনাকে না পেয়ে মাইশাকে নিয়ে গেছেন, তখন আমার স্বামী বলে ঠিক আছে তুমি বাসাতেই থাকো আমি আসতেছি।

এ কথা বলার এক ঘন্টা পর পুনরায় রোজিনা বেগম মাইশা কে দিয়ে আমার ঘরের দরজা খুলতে বলে, মাইশা আমাকে বলে, আম্মু দরজা খোলো আমি তোমার কাছে থাকবো, একথা শুনে আমি দরজা খুলতেই রোজিনা বেগম ঘরে ঢুকেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে চুলের মুঠি ধরে মেঝেতে ফেলে দিলে কতিপয় ৭-৮ জন ছেলে আমার ঘরের ঢুকে রোজিনার হুকুমে আমাকে মারধর করে এবং আমার ঘরের মালামাল লুটপাট করে নগদ দুই লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার সহ সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে যায় রোজিনা।ওইসব পুরুষ লোকদেরকে বলে যে আমি চলে যাচ্ছি তোরা শালিকে ন্যাং#টা করে ধ#র্ষ#ণ করে ছেড়ে দিবি তখন শরৎ নামের এক লোকের হুকুমে আমার বসতঘরের দরজা ভেতর থেকে লক করে দেয়।

এরপর টুটুল এবং রিয়াজ তালুকদার সহ অন্যান্য আসামিরা আমাকে খাটের উপরে ফেলে আমার সমস্ত জামাকাপড় ছিড়ে ফেলে বস্ত্র হরণ করে আমাকে পুরো উ#ল#ঙ্গ করে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঁচড়-চিমটি সহ সিগারেটের আ#গু#ন দিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে পুড়িয়ে দিলে এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর খবর পেয়ে আমার মা আমার বাসায় এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে মধুখালী থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে মধুখালী থেকে আমাকে ফরিদপুর ৫০০ বেডে রেফার করেন এবং ৫০০ বেডে ওসিসিতে দুইদিন ভর্তি রাখেন।

এরপর বাড়ি এসে ঘটনার প্রেক্ষিতে মধুখালী থানায় মামলা করতে যাই, থানায় আমার মামলা নেওয়া হয়নি। পরে আমার স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করিয়া কোর্টে একটা মামলা দায়ের করি (মামলা নং 343/24 নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আদালত)। আমি সবাইকে চিনতে না পারলেও ৩ জনকে চিনেছি, তাদের মধ্যে ১। শরৎ, পিত পান্নু মোল্লা, গ্রাম মেছড়দিয়া, ২। টুটুল, পিতা সিজার, গ্রাম পূর্ব গাড়াখোলা, ও ৩। রিয়াজ তালুকদার সহ আরও ৭-৮ জন।এদের মধ্যে শরতের নেতৃত্বে সবাই আমার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। শুনেছি শরৎ এই এলাকার বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ান।এমন বক্তব্য শোনার পরে লিজার কাছে জানতে চাওয়া হয় মামলার বিষয়ে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় আসামিদের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।আসামিদের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা আছে তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ অক্টোবর রাত্রে আনুমানিক নয়টা দশটার দিকে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন রোজিনা বেগমের ভাড়া করা শরৎ বাহিনী। এই সংক্রান্ত ব্যাপারে মধুখালী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন ঘটনাস্থলে আমার পুলিশ গিয়েছিল, তবে এমন ঘটনা ঘটেছ      কিনা তা আমার জানা নাই।

তিনি বলেন, আমার জানামতে সামাদ খানের বিরুদ্ধে থানায় দুইটা মামলা আছে। এরপর লিজার স্বামী সামাদ খান কে ফোন করা হলে তিনি জানান, ঘটনার সময় আমি বাসার কাছেই পুলিশের ভয়ে আড়ালে ছিলাম এবং আমার সামনে যখন হামলা চালায় তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ওসি মধুখালী কে ফোনে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করি, কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে কোন পুলিশ পাঠান নাই।সামাদ খান বলেন, আমি ওসি মধুখালী কে ফোন করে বলি যে, স্যার আমার সামনেই ৭-৮ জন পুরুষ আমার ঘরের মধ্যে ঢুকে আমার স্ত্রীকে মারধর করতেছে এবং বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে স্যার এখনই পুলিশ পাঠান। আমার কথা শোনার পর ওসি সাহেব ফোন রেখে দিয়ে পরবর্তীতে আর কোন পদক্ষেপ নেননি এবং আমার ফোনটাও আর রিসিভ করেননি।

সামাদ খানকে তার মামলার বিষয় জিজ্ঞাসা করা হলে সামাদ খান জানান। যে আমি আমার স্ত্রী রোজিনা বেগম কে অনেক আগেই তালাক দিয়েছি এবং আমার সন্তানদের দেখাশোনার জন্য আমি পুনরায় একটা বিবাহ করার কারণে ২০১৭ সালে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আমার নামে মানুষের কু পরামর্শে একটা মিথ্যা যৌতুকের মামলা দেন। যৌতুকের মামলা দায়েরের এক সপ্তাহের মাথায় নিজের হাত নিজে কেটে আমার বিরুদ্ধে ২৬ এর চার্জ এনে থানায় আরো একটা মামলা করেন। এই দুইটা মামলাই মিথ্যা, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বর্তমান স্ত্রী লিজা অনেকবার ওসি সাহেবের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলেও ওসি সাহেব তার অভিযোগ আমলে না নিয়ে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে আমার ছেলে সন্তান সহ তাকে থানা থেকে বের করে দেন।

সামাদ খান কে মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, আমরা স্ত্রী লিজা বেগম থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা না নিলে আমার স্ত্রী ভিকটিম লিজা নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু আদালতে একটি মামলা করেন (মামলা নং 343/24 নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আদালত), যেটি তদন্তের দায়ভার থানার উপরে দিয়েছেন।

সামাদ খান বলেন, আমি পেশায় একজন চিকিৎসক ও একুশের কন্ঠ পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধির দায়িত্বে কর্মরত আছি। আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে যেহেতু আমি একজন সাংবাদিক সে হিসাবে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করি তাই আমার শত্রু তো থাকবেই। আমি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, মাননীয় পুলিশ সুপার ফরিদপুর মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন করছি যে, আমার এই ঘটনার বিষয়ে সঠিক তদন্ত করিয়া প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করে আমাকে প্রশাসনিক সহযোগিতা করবেন।

প্রশাসনের উপর আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে, ফরিদপুরের মাননীয় পুলিশ সুপার ও আমাদের মধুখালীর মাননীয় অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল স্যার এবং আমাদের মধুখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাহেবের নিকট সহ প্রশাসনের সকল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি এই ঘটনার সুষ্ঠ নিরপেক্ষ তদন্ত করে সমস্ত দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানাই।

এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সেই সঙ্গে এমন নেককারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান সাংবাদিক মহল ও মধুখালীর সাধারণ জনগণ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102