কাজী সোহেল, দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি ॥
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের ছোট গোবিন্দপুর হরিসভা মন্দির থেকে গোবিন্দপুর ইযুথ ক্লাব মাঠ পর্যন্ত পাকা এই সড়কটির দৈর্ঘ্য মাত্র দুইকিলোমিটার।কিন্তু ছোট এই সড়কটির দুর্ভোগ অনেক বড়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে ডেবে গেছে, কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।একটু বৃষ্টি হলেই সড়কটিতে জমে হাটু পানি।পানি প্রবাহিত না হওয়ার কারণে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে।ফলে মানুষের চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে সড়কটি।স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী সহ স্থানীয়রা পড়েছে চরম দূর্ভোগে। অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তাটি ঠিক না হলে, রাস্তার পাশের বাড়ি ঘরও ভাঙ্গে পড়ার শংঙ্কা রয়েছে।স্থানীয়দের অভিযোগ গত ১৫দিন যাবত রাস্তাটি ভেঙ্গে রয়েছে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বর) ও চেয়ারম্যানকে জানানো পরেও তাঁরা এ বিষয়ে কোন পদক্ষেব নিচ্ছে না।
স্থানীয় মুর্দি দোকানদার মো. ইউসুফ বলেন, রাস্তাটি গত ১৫দিন যাবত ভেঙ্গে পড়ে আছে।বিষয়টি চেয়ারম্যান মেম্বারদের জানানোর পড়েও কোন কাজ হচ্ছে না।রাস্তাটি ভাঙ্গার কারণে আমার দোকানে ডেলিভারিম্যান গাড়ি নিয়ে এখন আর মালামাল (বিক্রির পণ্য) দিতে আসে না।বাধ্যহয়ে আমি অন্যাত থেকে বেশি খরচ দিয়ে মালামাল কিনে এনে বিক্রি করি।এতে আমি আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছি।অন্যদিকে স্থানীয় অঠোগাড়িগুলো এই সড়কে না চলাচলা করতে পারায় আমাদের চরম র্ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।একটি ইউনিয়ন পরিষদ বছরে হাজার-হাজার টাকার কাজ হয় কিন্তু অল্প কিছু টাকার কাজ চেয়ারম্যান করতে পারছে না! ভোটের সময় ঠিকই আসে আমাকে ভোট দাও.. ভোট দাও।
গৃহবধু রিফা বলেন, আমাদের বাড়ীর সামনের রাস্তা ভেঙ্গে এখন আমাদের বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার কায়দা হয়েছে কিন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বাররা এ বিষয়ে কোন খোঁজ খবরই নেয় না।উল্টো আমরা তাদের জানালেও তারা কর্ণপাত করছেন না।
স্থানীয় অটোগাড়ি চালক শেখ লিটন বলেন, চুর-ডাকাতির ভয়ে রাতে আমার অটোগাড়ি বাসায় রাখি সকালে গাড়ি বের করে যাত্রী আনা নেওয়া করি।এতেই আমার সংসার চলে।কিন্তু রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে কয়েকদিন ধরে চরম বিপাকে পড়েছি।
স্কুল শিক্ষার্থী সিফাত মিয়া বলেন, আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়ার ফলে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এখন স্কুলে যেতে হচ্ছে।বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এমপির সুদৃষ্টি কামনা করছি।যাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের এই সড়কটি মেরামত করে দেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক যন্ত্রাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এক চেয়ারম্যন বলেন, একটা পরিষদের বিভিন্ন ফান্ড থাকে চেয়ারম্যন চাইলে রাস্তাটি তাৎক্ষণিক মেরামত করতে পারে।কিন্তু এই চেয়ারম্যন কেন কাজটা করছেন না সেটা সেই ভালো বলতে পারবেন? তবে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার কাজটা করা উচিত ছিলো।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মহিলা মেম্বার) গীতা রানি বলেন, স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছেন আমি সাথে সাথে সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়ে আছে।বিষয়টি আমাদের যন্ত্রাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেএম মনিরুজ্জামান তুহিনকে জানিয়েছি তিনি শুধু শুনেছেন কোন পদক্ষেব গ্রহণ করেনি।আমি একজন সাধারণ মেম্বার হয়ে কিছুই করতে পারবো না।
যন্ত্রাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেএম মনিরুজ্জামান তুহিন বলেন, বৃষ্টির কারনে সড়কে অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে।শুধু এই সড়কই নয়, আরও কয়েকটি স্থানে সড়ক নষ্ট হয়েছে বৃষ্টির কারনে। বিষয়গুলো নিয়ে এলজিইডির প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত সমাধান হবে।
এবিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)’র নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জুলফিকার হক চৌধুরি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।