নবাবগঞ্জ দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি ॥
ঢাকার নবাবগঞ্জে অবশেষে স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন স্বামী মনোরঞ্জন ও ভাশুর ভজন রায়। ঢাকার নবাবগঞ্জের যন্ত্রাইল ইউনিয়নের চন্দ্রখোলা নয়াহাটি এলাকার ভজন রায়কে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযুক্ত আসামী মনোরঞ্জন রায় (৩৮) এর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টায় আবদানী এলাকার পাট ক্ষেত থেকে তার মৃত উদ্ধার করে পুলিশ। মনোরঞ্জন চন্দ্রখোলা নয়াহাটি এলাকায় মৃত দুর্লভ রায়ের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রী নিপা রায় (২৫) কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাবার বাড়িতেই বেশী সময় থাকেন। ওই এলাকায় বসবাসের সুবাধে একাধিক পুরুষের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। পরকীয়া সম্পর্কের ঘটনা নিয়ে চন্দ্রখোলা এলাকায় একাধিক গ্রাম্য শালিসীও হয়েছে। এ বিষয়ে ভাশুর ভজন রায় বাধা দিলে তাকে মারতে স্বামী মনোরঞ্জনকে নানা পরামর্শ দেন নিপা। স্ত্রীর কথায় মনোরঞ্জন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর আপন চাচাতো ভাই ভজন রায়কে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সোমবার রাতে মারা যায় ভজন।
প্রতিবেশী ও পুলিশের ভাষ্যমতে, সোমবার সন্ধ্যায় ভজন রায় তাঁর চাচাতো ভাই মনোরঞ্জন রায়কে তাঁর স্ত্রীর বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ জানায়। এসময় মনোরঞ্জন নিজ স্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলায় চাচাতো ভাই ভজনকে দেখে নেওযার হুমকি দেন। পরে রাত ৯ টায় মনোরঞ্জন তাঁর হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ভজন রায়ের মাথায় আঘাত করেন। এসময় ভজনের চিৎকারে প্রতিবেশী ও তাঁর স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কত্যর্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ঘটনায় ভজনের স্ত্রী সবিতা রায় মঙ্গলবার সন্ধায় নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলার আসামী মনোরঞ্জন কে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে খুঁজতেছিলো। বুধবার দুপুরে এলাকাবাসী বাড়ির কাছেই পাট ক্ষেতে গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে কাছে গিয়ে মনোরঞ্জনের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখে। এরপর তাাঁরা তাঁকে তুলে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে। পথেই সে মারা যায়। পরে স্বজনরা পুলিশকে খবর দেয়।
সংবাদ পেয়ে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল করে। তবে শরীরে কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা মনোরঞ্জন বিষ পান করে আত্মহত্যা করতে পারে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে হয়তো মৃত্যূর রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি মোঃ শাহজালাল বলেন, পুলিশ সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে যায়। মনোরঞ্জনের মৃত দেহটি উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে হত্যা মামলার আসামী হওয়ার অনুশোচনা থেকে বিষ পানে আত্মহত্যা করতে পারে।
স্বজনদের অভিযোগ, স্ত্রী নিপা রায়ের পরকীয়ার বলি হয়ে স্বামী মনোরঞ্জন ও ভাশুর ভজনকে মৃত্যুর পথে পাড়ি জমাতে হলো। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে এলাকার মানুষ। তাদের দাবি মনোরঞ্জনের স্ত্রী নিপা রায়ই এ দুটি মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
নিহত মনোরঞ্জনের বোন অর্চনা রায়ের অভিযোগ ভাইয়ের স্ত্রী নিপাই তাঁকে মেরে ফেলে রেখেছে। নিপার বিচার চাই।