অনলাইন ডেস্ক ॥
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে । ঈদুল আযহার নামাজ শেষে পশু কোরবানিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নগরবাসী। রাজধানীর অলিগলি, গ্যারেজ ও নির্দিষ্ট ফাঁকা জায়গায় পশু কোরবানি হয়েছে।
এদিকে, গরু কেনা থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট হাসিল পরিশোধ এবং অন্যান্য খরচ যোগ করলে দেখা যায়, কোরবানির মাংসের দাম দাঁড়ায় কেজি প্রতি প্রায় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা (মূলত গরু কেনার ওপর নির্ভর করে এর দাম)। অথচ সেই মাংসই এখন হাত ঘুরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়েছে ৪৫০-৫০০ টাকা দরে। মানভেদে এগুলোর মূল্য আবার ওঠানামাও করছে।
গত কয়েক বছরের মতো এবারও চোখে পড়ছে সেই দৃশ্য। মূলত দুপুরের পর থেকে এ বিষয়টা বেশি পরিলক্ষিত হয়। বেলা যত গড়ায় রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে চোখে পড়ে এসব অস্থায়ী মাংসের হাট। এবারও দেখা গেল সেই একই চিত্র। শহরের অলিতে-গলিতে অস্থায়ী এ বাজারে তুলনামূলক কম দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর জুরাইন রেলগেট, সূত্রাপুর, ধোলাই খাল মোড়, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, তেজগাঁও, গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, রামপুরা বাজার, খিলগাঁও, তালতলা ও গাবতলির বিভিন্ন এলাকায় এ দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
মূলত সকাল থেকে ভিক্ষুক এবং দুস্থরা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে যে মাংস সংগ্রহ করেছেন সেটাই তারা এসব স্থানে বিক্রি করছেন। কিন্তু এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীও। সূত্রাপুরের কাঠেরপুল এলাকার এক ভ্রাম্যমাণ (ভ্যানে করে বিক্রি করেন) হালিম ব্যবসায়ী বললেন, দোকান থেকে মাংস কিনতে গেলে কেজি প্রতি কমপক্ষে ৭৫০ টাকা লাগে। তাই এ সময় কমদামে কিছু মাংস সংগ্রহ করে রাখছি। ঠিক একই কথা বললেন বাড্ডা এলাকার এক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী। তিনি কাবাবের মাংস হিসেবে এগুলো সংগ্রহ করে রাখছেন। পরবর্তীতে ভ্যানে করে কাবাব হিসেবে বিক্রি করবেন তিনি।
এছাড়া নতুন বাজারের সামনে ফুটওভার ব্রিজের নিচে এরকম এক মাংস বিক্রেতার দেখা মিলল। পলিথিনের ব্যাগে করে প্রায় পাঁচ কেজি মাংস নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। জানতে চাইলাম এখানে কেন এনেছেন এগুলো। তিনি বললেন, এতো মাংস রান্না করে খাওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। তার চেয়ে বরং কিছু মাংস বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় সেটা দিয়ে দুই সপ্তাহ সংসার চালানো যাবে।
কিন্তু সবশেষে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, এসব মাংস মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাওয়ায় মাংসের মান ঠিক থাকবে কি না? কারণ বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বিভিন্ন রকমের মাংস একত্রিত করে বিক্রি করা হচ্ছে কেজি দরে। এমনিতেই সারাদিন গরম ছিল চরমে। এর ওপর ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি এসব মাংস। তাই এ মাংসগুলো যখন বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত হবে তখন এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।