মো. এনামুল হক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি॥
পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের প্রধানপাড়া গ্রামে এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যায় দায়ের করা মামলায় ৯ বছরের মাথায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (০২ জুন) বিকেলে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আদালতের বিচারক বিএম তারিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন। এরআগে, গত ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ডাঙ্গীপুকুর গ্রামের মৃত কাশিম উদ্দীনের ছেলে ও নিহতের ভাই মজির উদ্দীন বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি অজ্ঞাত নামার অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে ২০১৬ সালে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে।
মামলার আসামিরা হলেন অমরখানা ইউনিয়নের নিমাইপাড়া বোর্ড অফিস গ্রামের আফাজ উদ্দীনের ছেলে কাবুল ওরফে শহীদুল ইসলাম (৩৫) ও একই ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামের জহির উদ্দীনের ছেলে নাজমুল হুদা (৩৮), হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঢাংগীপুকুরি গ্রামের সমির উদ্দীনের ছেলে রবিউল ইসলাম (৫২) ও একই ইউনিয়নের ব্রম্মতল গ্রামের ওসমান আলী ওরফে ফেনডেরার ছেলে কাবুল হোসেন (৩৮)। দুইজনকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও কাবুল ওরফে শহীদুল ইসলাম (৩৫) ও নাজমুল হুদাকে (৩৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
আদালত ও মামলার এজাহারে জানা গেছে, ভিকটিম নুরিনা বেগম একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর বাদীর (ভাই) বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান।পরদিন হাফিজাবাদ ফুলপাড়া গ্রামে রোকেয়া বেগম নামে আরেক বোনের বাড়িতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন তিনি। এদিকে তাকে না পেয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে অমরখানা ইউপির প্রধানপাড়া গ্রামে শালমারা গড়ের ইউক্লিপটার্স ও আকাশ মনি বাগানে জঙ্গলের ভেতরে এক নারীর গলিত মরদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীরা লোকজন।
পরে পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে মজির উদ্দীন ও পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে নুরিনাকে শনাক্ত করে। একইসঙ্গে কিছু আলামত জব্দ করে পুলিশ। ওইদিন রাতে মজির উদ্দীন বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি অজ্ঞাত নামার অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে ২০১৬ সালে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে তাদের গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া ও সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে দীর্ঘ ৯ বছরের মাথায় রবিবার বিকেলে আদালত ৪জন আসামীর মধ্যে দুইজনকে অব্যাহতি দিয়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আদালতের পি.পি আজিজুর রহমান আজু।আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবু সাঈদ। আমাদের প্রতিনিধি মো. এনামুল হককে বলেন, আমরা আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট না। আমরা ন্যায় বিচার পাই নি। উচ্চ আদালতে আপিলের আবেদন করা হবে।